কাটিং ফ্লুইড বা কুল্যান্ট নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা
কাটিং ফ্লুইড বা কুল্যান্ট কি? ইহা কেন ব্যবহার করা হয়।
কাটিং ফ্লুইড ও কাটিং ফ্লুইড বা কুল্যান্ট হচ্ছে এক ধরনের প্রবাহী যা মেশিনে জব কাটিবার সময় জবে এবং কাটিং টুলে প্রয়ােগ করা হয় ।
কাটিং ফ্লুইড বা কুল্যান্ট ব্যবহারের কারণঃ
১) ইহা টুল এবং জবের ঘর্ষণে অতিরিক্ত তাপ উৎপাদন হতে বাধা প্রদান করে।
২) উৎপন্ন চিপ অপসারনে সহায়তা করে ।
৩) জবের প্রসারন হতে রক্ষা করে।
৪) ইহা জবকে তৈলাক্ত করে এবং টুল ও জবকে ক্ষয়ের হাত থেকে তৈরীকৃত জবকে রক্ষা করে।
৫) কাটিং ফ্লুইড বা কুল্যান্ট ব্যবহারে কাটিং টুলের টুল লাইফ বেড়ে যায়, জবের সারফেস ফিনিস সুন্দর হয় এবং জব তৈরী খরচ কম পড়ে।
(৫) কাটিং ফুইড বা কুল্যান্ট কাটিং টুল দ্বারা ধাতু কাটার গতিকে সহজ করে থাকে।
(৬) উচ্চ তাপমাত্রার জন্য চিপ টুলফেইসে লেগে যেতে চায়। কাটিং ফ্লুইড বা কুল্যান্ট এটি দুর করে।
(৭) কাটিং ফ্লুইড বা কুল্যান্ট ওয়ার্কপিস ও মেশিনে মরিচা পড়া রােধ করে।
কাটিং ফুইড বা কুল্যান্টের কি কি গুনাবলী থাকা উচিত?
কাটিং ফ্লুইডের কি কি গুনাবলী থাকা উচিত সেগুলাে নিম্নে দেয়া হলাে। যথা-
১) ইহার লুব্রিকেটিং গুণাবলী থাকতে হবে।
২) উচ্চ থার্মাল কন্ডাক্টিভিটি থাকতে হবে ।
৩) ইহা দামে সস্তা ও সহজলভ্য হতে হবে।
৪) ইহা চিপ এবং ভেজাল থেকে সহজে অপসারন করা যায় এমন হতে হবে।
৫) ইহার ভিসকোসিটি কম হতে হবে যাতে সহজে প্রবাহিত করা যায়।
কাটিং ফ্লুইড কত প্রকার ও কি কি? প্রত্যেক প্রকারের উদাহরণ দেওয়া হলোঃ
ইহা তিন প্রকার। যথা-
(ক) কঠিনঃ গ্রাফাইট মলিবডেনাম ডাইসালফাইড, মােম ইত্যাদি।
(খ) তরলঃ ইহাকে আবার দুই ভাগে ভাগ করা যায়।
যথাঃ
১। ওয়াটার বেস কাটিং ফ্লুইডঃ যেমন- ওয়াটারের সাথে অ্যালকালি (সােডা অ্যাশ, ট্রাই সােডিয়াম ফসফরাস) মিশিয়ে যে কাটিং ফ্লুইড তৈরী করা হয়।
২। মিনারেল অয়েল বেস কাটিং ফ্লুইডঃ ইমালশন/সলিউবল অয়েল (ই.পি) মিনারেল লার্ড অয়েল ইত্যাদি।
(গ) গ্যাসীয় কাটিং ফ্লুইডঃ কম্প্রেশড এয়ার, আর্গন, হিলিয়াম, নাইট্রোজেন ইত্যাদি।
(ঘ) রাসায়নিক কাটিং ফ্লুইডঃ সালফারাইজড খনিজ তৈল।
রাসায়নিক কাটিং ফ্লুইড এর সুবিধাসমূহঃ
রাসায়নিক কাটিং ফ্লুইড এর সুবিধাসমূহঃ
(১) এটি উত্তম মরিচা প্রতিরােধক গুণ সম্পন্ন ।
(২) পানি থাকার জন্য এটি উত্তম কারক বলে গণ্য।
(৩) এটি বিষাক্ত নয় ।
(৪) এটি অ-দাহ্য এবং সহজে ধোঁয়া সৃষ্টি করেনা।
(৫) এটি ঘর্ষণাঙ্ক হ্রাসের দ্বারা উত্তাপ সৃষ্টি হ্রাস করে।
(৬) এটি কর্তন বা দ্রবণীয় তৈল অপেক্ষা দীর্ঘস্থায়ী।
(৭) এটি দ্রুত দুর্গন্ধযুক্ত হয়ে পড়েনা ।
(৮) এতে সূক্ষ্ম চিপ এবং শক্ত কণা দ্রুত থিতিয়ে যায় ।
(৯) এটি দ্রুত এবং সহজে পরিষ্কার করা যায়।
(১০) এটি মেশিনের শীতলকরণ ব্যবস্থায় কোন প্রকার প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি করে না ।
লুব্রিক্যান্ট কি? বিভিন্ন প্রকার লুব্রিক্যান্টের নামঃ
লুব্রিক্যান্টঃ এটা এক প্রকার চটচটে প্রকৃতির পিচ্ছিল কারক পদার্থ যা প্রধানত মেশিনের জীবনী শক্তি বৃদ্ধি করে মেশিনে ও এর বিভিন্ন অংশকে বিভিন্ন প্রকার ক্ষয়ক্ষতি হতে যথাযথ ভাবে রক্ষা করে। এদের কার্য ক্ষমতাকে, অক্ষুন্ন রাখতে ও দু’টি অংশের মধ্যে ঘর্ষণজনিত বাধা (Frictional Resistance) এবং উৎপন্ন তাপকে কমিয়ে মসৃণ ও সহজভাবে চালনা করতে যে পিচ্ছিল কারক ব্যবহৃত হয়ে থাকে তাকে লুব্রিক্যান্ট বলে । যেমনঃ তৈল, মবিল, গ্রীজ ইত্যাদি।
বিভিন্ন প্রকার লুব্রিক্যান্টের নামঃ
নিম্নে বিভিন্ন প্রকার লুব্রিক্যান্টের নাম লিপিবদ্ধ করা হল। যথা-
(১) তেল
(২) মবিল
(৩) গ্রীজ
(৪) খনিজ তৈল
(৫) প্রাণীজ চর্বিজাত তৈল
(৬) বীজজাত তৈল
(৬) উদ্ভিদজাত তৈল
বিয়ারিং এ তৈলাক্তকরণের প্রয়ােজনীয়তাঃ
সাধারণত নিম্নোক্ত কারণসমূহের জন্য বিয়ারিং এ লুব্রিক্যান্ট ব্যবহৃত হয়। যেমন-
(১) বিয়ারিং এবং শ্যাফটের মধ্যবর্তী ফাঁকা অংশে অবস্থান পূর্বক ঘর্ষণজনিত বাঁধাকে হ্রাস করতে।
(২) বিয়ারিং ও শ্যাফট এর মধ্যে ঘর্ষনের জন্য যে ক্ষয়ক্ষতি হয় একে বাধা দিতে।
(৩) বিয়ারিং ও শ্যাফটের পরস্পর ঘর্ষণের ফলে যে তাপ উৎপন্ন হয় সেই তাপকে প্রতিরােধ করতে।
(৪) বিয়ারিং এ ভর করে শ্যাফট মসৃণভাবে ঘুরার কারনে।
কুল্যান্ট ও লুব্রিক্যান্টের মধ্যে পার্থক্যঃ
কুল্যান্ট ও লুব্রিক্যান্টের মধ্যে নিম্নরুপ পার্থক্য পরিলক্ষিত হয়।
যথা-
কুল্যান্টঃ
(১) এটা কাটিং টুল এবং
কাৰ্যবস্তুর মধ্যে ঘর্ষণের ফলে উৎপন্ন তাপকে কমাতে সাহায্য করে।
(২) এটা শুধু মাত্র কাটিং টুলের জীবনী শক্তিকে অব্যাহত রাখে ।
(৩) এটা কাটিং টুল বা কাজের বস্তুকে মরিচা পড়তে বাধা দেয়।
(৪) কাটিং টুল দ্বারা কাটার গতিকে সহজ করে থাকে।
লুব্রিক্যান্টঃ
(১) এটি দু'টি অংশের মধ্যে ঘর্ষণ।
জনিত তাপকে কমাতে ব্যবহৃত হয়।
(২)এটা মেশিন ও এর জীবনী শক্তিকে অব্যাহত রাখতে সহায়তা করে।
(৩) মেশিন বা এর অংশ সমূহকে মরিচা বা ক্ষয় হতে রক্ষা করে।
(৪) দু'টি অংশের মধ্যে ঘূর্ণন বা সরলগতি সহজতর হয়।
Very good tutorial
Thanks