অনলাইনে ইনকাম করার উপায়

অনলাইনে কি সত্যিই ইনকাম করা সম্ভব?

এক কথায় যদি উত্তর দিতে হয় তবে বলব, হ্যা অবশ্যই। অনলাইনে ইনকাম নিয়ে অনেক গুঞ্জন এবং অনেক রূপকথাও রয়েছে৷ হাসছেন? হাসারই তো কথা, যদিও অনলাইনের ব্যাপারে রুপকথার কথা শুনলে হাসি পায়, তথাপি কথাটা কিন্তু বাস্তব। এই রকম কথা বলার পেছনে যথেষ্ট যুক্তি আছে। কারণটা এখন বলব না।

একটু পরে আপনি নিজেই বুঝতে পারবেন কেন আমি এই কথা বলেছি। যাই হোক অনলাইনে ইনকাম কিন্তু সত্যিই সম্ভব। এটা অবাস্তব কোন কিছু নয়। এখানে আপনার কোন সার্টিফিকেট এর দরকার নেই।

আপনাকে জানতে হবে কাজ। শুধুমাত্র কঠিন ইচ্ছাশক্তি থাকলে আপনিও হয়ে উঠতে পারেন একজন অনলাইনে ইনকাম এক্সপার্ট।বিস্তারিত ভাবে ধাপে ধাপে জানতে পারবেন।

অনলাইনে ইনকাম করতে হলে কি যোগ্যতা থাকতে হবে?

হ্যা এটা একটা গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন৷ তবে এই প্রশ্নের উত্তর কিন্তু অনেক সুন্দর৷ অনলাইনে ইনকাম করতে গেলে আপনার কোন প্রকার প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার দরকার নেই৷ আপনাকে কাজ জানতে হবে আর অবশ্যই ইংরেজিতে লিখতে জানতে হবে। এক্ষেত্রে আপনাকে ইংরেজিতে তেমন দক্ষ হতে হবে না, শুধুমাত্র আপনার মনের ভাব প্রকাশ এবং ক্লাইন্ট এর কথা বুঝার যোগ্যতা থাকলেই যথেষ্ট।

অনেক ৭-৮ পাশ লোক রয়েছেন যারা অনলাইন থেকে ইনকাম করছেন অথচ তাদের একাডেমিক শিক্ষা অনেক কম৷ একটু চেস্টা করলে আপনিও পারবেন।

আনলাইনে কিভাবে ইনকাম করব?

অনলাইনে ইনকাম অনেক উপায় রয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে, ব্লগিং, ফ্রীল্যান্সিং তথা আউটসোরসিং, এফিলিয়েট মার্কেটিং, ই-মেইল মার্কেটিং, এড পোস্টিং ইত্যাদি। তবে সবচেয়ে নির্ভর যোগ্য এবং ভাল উপায় হল ফ্রীল্যান্সিং করা৷ পরে আমরা ফ্রীল্যান্সিং নিয়ে বিস্তারিত আলচনা করব।

অনলাইন ইনকাম এটা শিখতে কতদিন লাগতে পারে?

এটা একটা কমন প্রশ্ন। অনেকেই বলতে গেলে প্রায় সবাই এই প্রশ্নটি করে থাকে যে কত দিন লাগবে অনলাইন থেকে ইনকাম করতে। এই প্রশ্নের উত্তরে আমি বলব, এটা আপনার উপর নির্ভর করে। তো চলুন ব্যাপারটা একটু ক্লিয়ার করা যাক একদম নতুন অবস্থায় আপনাকে আগে ঠিক করতে হবে আপনি কি কাজ করবেন। কাজের সিলেকশান কিন্তু খুব বড় একটি ব্যাপার। আপনি নিজেকে প্রশ্ন করুন যে, আমি কি কাজ করতে পারব।

আমার কাজ করার জন্য কতটুকু সময় রয়েছে, তাছাড়া কাজের জন্য আপনার পারিপার্শ্বিক অবস্থাটাও বিবেচনার যোগ্য৷ এই সকল দিক বিচার করে আগে ঠিক করুন আপনি কি কাজ করবেন৷ কি কি ধরনের কাজ পাওয়া যায় এবং কোনটাতে কত সময় লাগে তা আস্তে আস্তে জানতে পারবেন। এখন কি কাজ শিখবেন তা যদি ঠিক করতে পারেন তাহলে এবার কাজ শিখতে নেমে পরুন।

কাজ শেখার জন্য আপনাকে সঠিক দিক নির্দেশনা নিয়ে এগুতে হবে৷ আপনাকে আগে বিবেচনা করতে হবে যে, আপনি এখন নতুন অনেক কিছুই জানেন না। তাই আগেই হুট করে ৫-১০ হাজার টাকা খরচ করে কোন কোর্স এ ভর্তি হয়ে যাবেন না।

কি ভাবছেন, অনলাইনে ইনকাম এর জন্য কাজ শিখবেন?

হ্যা উপরে মোটামুটি অনলাইনে ইনকাম নিয়ে কিছু বেসিক আলোচনা করা হয়েছে। এখন আপনি ভাবতেই পারেন কাজ শিখবেন৷ তবে এক্ষেত্রে আপনাকে অনেক সতর্ক হতে হবে। কাজ শেখার আগে আপনাকে অনেক কিছু বিবেচনায় আনতে হবে, যেমন, কি কাজ শিখবেন, কোথা থেকে শিখবেন, কিভাবে শিখবেন, আপনি পারবেন কি না ইত্যাদি।

অনলাইনে ইনকাম এর জন্য কি কাজ শিখবেন?

অনলাইনে ইনকাম করতে হলে কাজ আপনাকে শিখতে হবেই। কাজ না শিখে আপনি ইনকাম করতে পারবেন না। যদিও কিছু অল্প সাইট আছে যারা কাজ দেয় কিন্তু সেগুলো পারমানেন্ট কোন সমাধান না, বরং ঐ সকল সাইটে কাজ করতে গিয়ে কিছুদিন পর আপনি বিরক্ত হয়ে যাবেন এবং আপনি ঐ সাইট ত্যাগ করবেন কিন্তু ডলার তুলতে পারবেন না।

কারন ওদের মিনিমাম ১০ ডালার এর মত ক্যাশআউট লিমিট থাকে, কাজেই দশ ডলার হওয়ার আগেই আপনি ঐ সাইট ত্যাগ করবেন ফলে আপনার সময় বৃথাই নস্ট হবে। তাহলে এবার চলুন আসল আলোচনায়৷ কি কাজ শিখবেন তা ঠিক করতে গেলে আপনাকে আগে ভাবতে হবে যে, আপনি ঠিক কি কাজ শিখতে চান৷

আপনার কোন কাজটা শেখা ভাল এবং আপনি কোন দিকে বেশি ইন্টারেস্টেড। তবে এক্ষেত্রে কিছু টিপস ফলো করা ভাল। সেগুলো জানার আগে চলুন আমরা জেনে নেই অনলাইনে আয়ের জন্য কি কি কাজ রয়েছে।

অনলাইনে ইনকাম করার জন্য কি কি কাজ রয়েছে?

অনলাইনে ইনকাম করার জন্য রয়েছে নানা উপায়৷ তার মধ্যে সেরা উপায় হল ফ্রীল্যান্সিং করা৷ তবে ফ্রীল্যান্সিং কিন্তু কোন কাজের নাম নয়৷ এটা কাজের একটা সিস্টেম৷ সহজ কথায় বলতে গেলে, ফ্রীল্যান্সিং হল স্বাধীন কাজের পেশা। এখানে পৃথিবীর নানা প্রান্ত থেকে কাজ দাতা এবং কাজ গ্রহীতা থাকে৷ কাজ দাতারা কাজ দেয় এবং কাজ গ্রহীতারা কাজ নিয়ে কাজ করে৷

কাজ শেষ হলে ঐ কাজ দাতা টাকা পরিশোধ করে দেয়৷ এভাবেই চলে ফ্রীল্যান্সিং প্রসেস। আর এই কাজ দাতাদের পাওয়া যায় বিভিন্ন ফ্রিল্যান্সিং সাইট যেমনঃ- Upwork, Fiveer, Freelancer, 99designes ইত্যাদি ওয়েবসাইটে৷ এই সকল সাইটে কাজ করতে হলে আপনাদের কাজ গ্রহীতা হিসেবে অর্থাৎ একজন ওয়ার্কার হিসেবে অ্যাকাউন্ট খুলতে হবে। তারপর বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে কাজের জন্য আবেদন করতে হবে।

এখানে রয়েছে নানা ধরনের কাজ। তো চলুন দেখে নেই কি কি ক্যাটাগরির কাজ রয়েছে এই ফ্রীল্যান্সিং মার্কেটে৷

● এড পোস্টিং (ক্রেগলিস্ট সহ বিভিন্ন সাইটে)

● ডাটা এন্ট্রি (যেমনঃ আর্টিকেল রাইটিং, ভাষা অনুবাদ ইত্যাদি।)

● ডিজাইন (গ্রাফিক্স ডিজাইন, লোগো ডিজাইন ইত্যাদি)

● এসইও (প্রচুর কাজ রয়েছে এসইও এর)

● ওয়েব ডেভলপমেন্ট (অনেক কাজ পাওয়া যায় তবে কাজ একটু জটিল)

● মার্কেটিং (এফিলিয়েট, ই-মেইল মার্কেটিং ইত্যাদি)

● এডিটিং (ভিডিও এডিট, এনিমেশন, ৩ডি, ২ডি ইত্যাদি)

উপরে মূলত ফ্রীল্যান্সিং মার্কেটপ্লেসের মেজর বা প্রধান অংশ সমূহ নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। এছাড়াও আরও টুকিটাকি অনেক কাজ থাকে ফ্রীল্যান্স মার্কেটে৷

এসইওঃ

ফ্রীল্যান্সিং মার্কেটপ্লেসের এক অতি বিশাল অংশ জুড়ে রয়েছে এসইও। এর প্রায় ১০-১২ হাজার কাজ (আপওয়ার্ক ফাইবার+ফ্রীল্যান্সার+বিহান্স+পিপলস পার আওয়ার) সবসময়ই থাকে। আর এসইও এর সবচেয়ে বড় যেই প্লাস পয়েন্ট সেটা হল- এর কাজ গুলো অনেকটা সোজা এবং মানসম্মত। মানে এর কাজ শিখতে আপনার ১৫-২০ দিন সময় লাগতে পারে অপর দিকে আপনি সহজেই একটু ট্রিক খাটিয়ে কাজ পেয়ে যেতে পারেন৷

ডাটা এন্ট্রিঃ

উপরে আলোচিত কাজ গুলোর মধ্যে সবচেয়ে সোজা হল ডাটা এন্ট্রি এর কাজ। নতুন অবস্থায় আপনি এটি করতে পারেন কিন্তু এতে রয়েছে অনেক সমস্যা৷ যেমন-এটার কাজ সহজ বিধায় আপনার আর আমার মত যারা সহজেই আয় করতে চায় তারা সবাই ডাটা এন্ট্রি করতে যায়৷ ফলে দেখা গেছে এই সেক্টরে কম্পিটিশান অনেক অনেক হাই৷

ফলে নতুনদের জন্য কাজ পাওয়া অনেক কঠিন হয়ে দাড়ায়৷ আবার এই সেক্টরে পুরাতনরা তো আছেনই। কাজেই নতুন অবস্থায় আপনার কাজ পাওয়ার সম্ভাবনা প্রায় ১৫%। ফলে নতুন অবস্থায় এই খাতে হাত না দেয়াই ভাল।

মার্কেটিংঃ

নতুনদের জন্য আমি এটা এডভাইস করি না। কারন আপনি নিজে নিজে এই খাতে কখনোই ভাল করতে পারবেন না আপনার সাথে যদি কারো পরিচয় থাকে যিনি মার্কেটিং করেন তাহলে তার হেল্প নিয়ে শুরু করতে পারেন৷ আবার অনেক কোম্পানি কাজ শেখায় তাদের কাছ থেকে কাজ শিখে নিতে পারেন৷ তবে তারা এক্ষত্রে ১৫-২০ হাজার টাকা নিতে পারে কাজ শেখাতে৷ আমার মতে নতুন অবস্থায় এত টাকা দিয়ে কাজ না শেখাই হবে বুদ্ধিমানের কাজ।

ওয়েব ডেভলপমেন্টঃ

অনলাইনের আরেকটি বিশাল দুনিয়া জুড়ে রয়েছে ওয়েব ডেভেলপমেন্ট। ওয়েবসাইট ডিজাইন, পিএসডি টু এইচটিএমএল ইত্যাদি। নতুনরা এইচটিএমএল, সিএসএস, জাভাস্ক্রিপ্ট ইত্যাদি শিখে কাজ করতে পারবেন এই সেক্টরে৷ কিন্তু অনেকেই শুরুতে বুঝতে পারবেন না। কারন এসইও এর তুলনায় এই কাজগুলো অপেক্ষাকৃত কঠিন৷ তবে একটু চেষ্টা করলে অসম্ভব নয়।

ডিজাইনঃ

অনলাইনে তথা ফ্রীল্যান্সিং মার্কেটপ্লেসে বিভিন্ন ডিজাইন যেমন- লোগো ডিজাইন, গ্রাফিক্স ডিজাইন, বিজনেস কার্ড ডিজাইন, পিএসডি ডিজাইন তৈরি ইত্যাদি এর অনেক কাজ পাওয়া যায়৷ তবে আপনার যদি বিশেষ ক্রিয়েটিভিটি না থাকে তবে এই খাতে কাজ না করাই উত্তম৷ কারন আঁকা-আকি কিন্তু অনেকটা আল্লাহ্ প্রদত্ত জিনিস৷ তবে কঠোর সাধনা করলে এটা অসম্ভব কিছুই নয়৷ আপনিও হয়ে উঠতে পারেন অন্যতম সেরা ডিজাইনার৷

এছাড়াও রয়েছে নানা ধরনের কাজ যেমন- এড পোস্টিং এর কাজ। তবে এই সব কাজে চেনা কারো সহায়তা থাকলে অনেক ভাল হয়৷ তাহলে এবার তো কাজ সম্পর্কে আইডিয়া পেলেন৷ কি সিদ্ধান্ত নিলেন? কি কাজ শিখবেন?

অনলাইনে ইনকাম করার জন্য কাজ শেখার ব্যাপারে কিছু পরামর্শঃ

নতুনদের জন্য আমি আপনাদের এসইও দিয়ে শুরু করার পরামর্শ দিতে চাই৷ কারন এটি সোজা এবং অনলাইনের উপর খুব অল্প জ্ঞান নিয়ে যে কেউ এসইও এর কাজ করে ইনকাম করতে পারে। এর মধ্যে রয়েছে, অনপেজ অপটিমাইজেশন, ব্যাকলিঙ্ক, বিভিন্ন কাঙ্ক্ষিত ফলাফল অর্জন সহ আরও বিভিন্ন ধরনের কাজ। এই কাজ গুলো আপনারা সহজেই রপ্ত করতে পারেন এবং ইনকাম করতে পারেন।

নতুনরা কাজও পাবেন তাড়াতাড়ি৷ আর সবচেয়ে বড় যে সুবিধাটি রয়েছে এই সেক্টরে, এখানে পার্সোনাল হেল্প সংক্রান্ত অনেক কাজ থাকে যা আপনি অল্প জ্ঞান নিয়েও করতে পারবেন। মনে রাখবেন, এসইও হচ্ছে গুগল নিয়ে কাজ, আর তাই গুগল কে বাদ দিয়ে আপনি অন্য যে সেক্টরেই কাজ করেন না কেন একটু আধটু সমস্যা হতেই পারে।

কাজেই আমি সব সময় আপনাদের উপদেশ দিতে চাই, এসইও শেখার৷ এটি আপনি চাইলে বিভিন্ন ব্লগ পড়েই শিখে ফেলতে পারবেন।এবার সিদ্ধান্ত আপনার৷ নিজেকে নিজে প্রশ্ন করুন, আপনি কি সত্যিই পারবেন কাজ করতে? যদি পারেন, তাহলে নিজেকে জিজ্ঞেস করুন আপনি ঠিক কি শিখতে পারবেন৷ কোন কাজটি আপনার জন্য শ্রেয় হবে।

এরপর কাজ শিখুন৷ ধীরে ধীরে একটু একটু করে আগান৷ ধৈর্য্য হারাবেন না। দেখবেন সফলতা পাবেন ইনশা-আল্লাহ্৷

অনলাইনে ইনকাম করার জন্য কোথায় পাব কাজ?

দেখেছেন কি বোকা আমি, কাজ সম্পর্কে ধারনা দিলাম অথচ বলাই হয়নি, কোথায় পাবেন এই কাজ? হ্যাঁ, ফ্রীল্যান্সিং মার্কেটে পাবেন কাজ। মনে প্রশ্ন আসতে পারে এই মার্কেট আবার কোথায়? না ভাই এই মার্কেট আপনার ঘরেই আছে৷ শুধু কম্পিউটার এ ইন্টারনেটে গিয়ে নিচের ওয়েবসাইটে যান, তাহলেই পাবেন। আসলে এগুলো হল বিভিন্ন ওয়েবসাইট যেখানে আপনি কাজ পাবেন৷ আপনাকে কাজ দেয়ার জন্য অনেক ক্লাইন্ট আছেন সেখানে আর কাজ করার জন্যও অনেক ওয়ার্কার আছেন সেখানে।

নিচে কিছু বিশ্ব সেরা ফ্রিল্যান্সিং সাইটের লিস্ট দেয়া হল-

https://www.upwork.com/

https://www.fiverr.com/

https://www.freelancer.com/

https://99designs.com/

https://www.behance.net/

https://www.peopleperhour.com/

https://odeskwork.com/

উপরের সাইট গুলোতে গিয়ে নিজেই দেখতে পারবেন কি কি কাজ আছে।

অনলাইনে ইনকাম নিয়ে কিছু ভুল ধারনাঃ

আপনাদের মাঝে এমন অনেকেই আছেন যারা অনলাইনে ইনকাম খুবই সহজ মনে করেন। আপনাদের এই ধারনা কিন্তু অনেকটা ভুল। এই পৃথিবীতে অন্যান্য কাজের মত অনলাইন থেকে ইনকাম করাও কঠিন কাজ। শুধুমাত্র তফাৎ এটাই যে অনলাইনে ইনকামের কোন লিমিটেশন নেই৷ চাকরিতে যেমন, মাস শেষে একটা নির্দিষ্ট টাকা পাবেন কিন্তু অনলাইন কিন্তু এমন নয়, এখানে আপনি এক টাকা নাও পেতে পারেন আবার কোটি টাকাও ইনকাম করতে পারেন।

তবে এখানে আপনি আপনার পারিশ্রমিক বাস্তব জগতের চেয়ে একটু বেশিই পাবেন। কারন, এখানে হিসাব হয় ডলারে৷ এমন অনেকেই আছেন যারা প্রতি ঘণ্টা ২০ ডলার রেটে কাজ করেন৷ তার মানে ১০ ঘণ্টা কাজ করলে উনি পাবেন ২০০ ডলার। বাংলাদেশি টাকায় যেটা দাড়ায় প্রায় ১৬০০০ টাকা। আমার মনে হয়, বাস্তব জীবনে দশ ঘণ্টা কাজে আপনাকে ১৬০০০ টাকা দিবে এমন কোম্পানি পাওয়া মুশকিল।

ঠিক এই জন্যই অনেকে বলে অনলাইনে টাকা উড়ে। এটা কিন্তু সম্পূর্ণ বানোয়াট এবং কাল্পনিক৷ যে ব্যক্তি সফল হয়, তার সফলতার কাহিনি শুনতে কিন্তু ভালই লাগে, কিন্তু ঐ লোকের সফল হতে যে কি কষ্ট এবং ত্যাগ স্বীকার করতে হয়েছে তা সেই ভাল জানে। কাজেই যেখানেই কাজ করুন না কেন, সেটা অনলাইন হোক আর অফলাইন যাই হোক, ভাল করে কাজ জানতে হবে এবং মনোযোগ দিয়ে কাজ করতে হবে।

বাস্তব জীবনে অনেক সময় কাজ জানলেও সার্টিফিকেটের অভাবে কাজ পাওয়া যায় না, কিন্তু অনলাইনে এই সুবিধা পাওয়া যায়৷ এখানে একটাই সুবিধা যে, আপনাকে কোন প্রাতিষ্ঠানিক সার্টিফিকেট দেখাতে হবে না, কাজ জানলে অবশ্যই আয় করতে পারবেন। কিন্তু তার জন্য কিন্তু আপনাকে কঠিন পরিশ্রম এবং সবুর করতে হবে৷

অনলাইনে ইনকাম বা ফ্রীল্যান্সিংটা আসলেই কি?

ফ্রীল্যান্সিং হল অনলাইনে ইনকামের একটি মাধ্যম। আপনি অনলাইনে কাজ করবেন আর সেই কাজের জন্য আপনাকে টাকা দেওয়া হবে। শুনতে অনেক সোজা হলেও অনলাইনে ইনকাম কিন্তু বাস্তব জীবনে ইনকাম করার মতই কঠিন। শুধু পার্থক্য এইটুকুই যে, বাস্তব জীবনে আমাদের দেশে কাজের সুযোগ অনেক কম কিন্তু অনলাইনে এই সুযোগ অনেক বিস্তৃত। যে কেউ নূন্যতম যোগ্যাতা নিয়েই শুরু করতে পারেন অনলাইনে ইনকাম। এর জন্য একটু ধৈর্য আর পরিশ্রম থাকলেই চলে।

আপনাদের মনে অনেকেরই এই প্রশ্ন থেকে যায় যে, এই যে আমি যে বলছি কাজ করবেন আর টাকা তুলবেন, এটা আমি কোথায় কাজ করব, আর কার কাজই করব, আবার টাকা কিভাবে পাব? এই প্রশ্নের উত্তর আমি দিচ্ছি। অনলাইনে কাজের জন্য অনেক সাইট রয়েছে৷ ওই সকল সাইটে গেলেই আপনি দেখতে পাবেন সেখানে অনেক ধরনের কাজ আছে৷ এই রকম কিছু ওয়েবসাইটের তালিকা উপরে দেওয়া আছে।

অনলাইনে ইনকাম করার জন্য এই কাজগুলো কারা দেন?

অনেক লোক আছেন যারা তাদের নিজের কাজগুলো করিয়ে নিতে চান অন্য কাউকে দিয়ে৷ এই রকম লোকেরা এই সকল সাইটে গিয়ে অ্যাকাউন্ট খুলেন তারপর তারা তাদের কাজগুলো পোস্ট করেন৷ যারা কাজ দেন বা কাজ পোস্ট করেন তাদেরকে বলা হয় ক্লাইন্ট বা বায়ার।এখন ওই একই ফ্রীল্যান্সিং সাইটে আবার অনেকে কাজ করার জন্য অ্যাকাউন্ট খুলেন (যেমনঃ আপনিও অ্যাকাউন্ট খুলবেন কাজ করার জন্য)।

ক্লাইন্ট যখন কোন কাজ পোস্ট করেন তখন তারা ওই কাজগুলো দেখে ওই কাজটি করার জন্য অনেকে আবেদন করেন৷ একে বলা হয় বিড করা৷ তো ধরুন একটি কাজের জন্য ৩০ জন বিড করেছেন, এখন যিনি কাজটি পোস্ট করেছেন তিনি এই ৩০ জনের মধ্যে থেকে একজনকে এই কাজটি করার জন্য নির্বাচন করবেন। মানে এই ৩০ জনের মধ্যে থেকে একজন কাজটি জিতে নিবেন এবং তিনি কাজটি করার সুযোগ পাবেন৷

তবে ক্ষেত্র বিশেষে ক্লাইন্ট একের অধিক ব্যাক্তিকেও কাজের জন্য মনোনয়ন করতে পারেন৷ তারপর ক্লাইন্ট মেসেজের মাধ্যমে জানিয়ে দেন কাকে তিনি মনোনয়ন করেছেন, যদি আপনি মনোনীত হন তাহলে আপনার এ্যকাউন্ট এ লগিন করলে নোটিফিকেশন এর মাধ্যমে জানতে পারবেন। যদি মনোনীত নাও হন, তবুও জানতে পারবেন। এর পর ক্লাইন্ট আপানার সাথে মেসেজ এ যোগাযোগ করবেন। অবশ্যই কাজ দেয়ার আগে ক্লাইন্ট আপনার সাথে মেসেজ এ যোগাযোগ করতে পারেন, তাই সব সময় মার্কেটপ্লেসে এ থাকার চেষ্টা করুন৷

অথবা আপানার ই-মেইল চেক করতে থাকুন, কারন ক্লাইন্ট থেকে কোন প্রকার রিপ্লাই পেলে ই-মেইল এ আপডেট পাবেন৷ এরপর কাজটি করা হয়ে গেলে ক্লাইন্ট আপনাকে টাকা দিয়ে দিবে৷ এই ভাবে টোটাল প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন হয়৷ এই গেলো পুরো হিস্টরি জিওগ্রাফি। আশা করি আপনারা অনেকেই যারা নতুন তারা একটু হলেও আইডিয়া পেয়েছেন যে, আসলে কিভাবে অনলাইনে ইনকাম করতে হয়।

আরও পড়ুনঃ মাসে লাখ টাকা আয় করার উপায়

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url