ওয়েল্ডিং কাকে বলে? ওয়েল্ডিং কত প্রকার ও কি কি? বিস্তারিত আলোচনা
ওয়েল্ডিং (Welding) কাকে বলে?
ওয়েল্ডিং (Welding): দুই খন্ড ধাতুকে উত্তাপের সাহায্যে গলিত বা অর্ধগলিত অবস্থায় এনে চাপে বা বিনা চাপে স্থায়ীভাবে জোড়া দেওয়ার প্রনালীকে ওয়েল্ডিং বলে।
ওয়েল্ডিং এর প্রকারভেদঃ
ওয়েল্ডিং প্রধানত ২ প্রকার। যথাঃ
১। প্রেসার বা নন-ফিউশন ওয়েল্ডিং।
২। নন প্রেসার বা ফিউশন ওয়েল্ডিং।
ওয়েল্ডিং এর সময় স্বাস্থ্য এবং সুরক্ষাঃ
ওয়েল্ডিং শপের কর্মীদের নিরাপত্তা সর্বপ্রথম বিবেচনা করতে হবে। এখানে বিদ্যুৎ, গ্যাস সহ বিভিন্ন দাহ্য পদার্থের অ-নিরাপদ ব্যবহার একজন কর্মীর জীবনের নিরাপত্তার জন্য মারাত্বক হুমকিস্বরূপ।
সুতরাং ওয়েল্ডিং এর পূর্বে অবশ্যই নিম্নোক্ত নিরাপত্তা ও সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। যথাঃ-
● সর্বদা গাঢ় লেন্সের ওয়েল্ডিং হুড ও নিরাপত্তা চশমা পরুন।
● সবসময় লম্বা লেদার গ্লোবস, ওয়েল্ডিং জ্যাকেট, এ্যাপ্রন এরং লেদার এর জুতা পরুন। লম্বা চুল থাকলে পেছনে গুটিয়ে রাখুন।
● কাজের কোন স্থানে কোন দাহ্য বস্তু থাকলে তা সরিয়ে ফেলতে হবে।
● ওয়েল্ডিং এর পূর্বে বৈদ্যুতিক সংযোগ স্থানগুলো পরীক্ষা করতে হবে।
● কর্মক্ষেত্রে কোন প্রকার পানি, তৈল, গ্রীজ জাতীয় দ্রব্য মেঝেতে পড়ে না থাকে সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে।
● গ্যাস সিলিন্ডার আগুন থেকে দুরে রাখতে হবে।
● টিগ ওয়েল্ডিং করার সময় ফ্লোমিটার ব্যবহারের পূর্বে ভাল্ব সকেট পরিষ্কার করা এবং আঘাত যেন না পায় সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে।
● টাংস্টেন ইলেকট্রোড ওয়েল্ডিং এর সময় জব এর সাথে লেগে না যায় সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে।
● যাবতীয় ইকুইপমেন্ট সমূহ ধাতব কণা এবং ধাতব স্তুপ থেকে মুক্ত রাখতে হবে।
ওয়েল্ডিং এর সরঞ্জাম বা ইকুইপমেন্ট (Equipment):
● বিদ্যুৎ সরবরাহ লাইন (এসি/ডিসি) (Power line)
● ইলেক্ট্রোড (Electrode)
● ইলেক্ট্রোড হোল্ডার (Electrode holder)
● লম্বা তার (Long electric cable)
● কানেক্টর (Cable connector)
● ক্যাবল লাগ (Cable lugs)
● হাতুড়ি (Hammer)
● আর্থিং ক্ল্যাম্প (Earthing clamp)
● তারের ব্রাশ (Wire brush)
● হ্যান্ড সিল্ড (Hand shield)
● নিরাপত্তা চশমা (Safety googles)
● চামড়ার হ্যান্ড গ্লোভস (Leather hand glooves)
● এপ্রোন (Apron)
● নিরাপত্তা জুতো (Safety shoes )
ওয়েল্ডিং সরঞ্জাম এর রক্ষণাবেক্ষণঃ
ওয়েল্ডিং রড এর রক্ষণাবেক্ষণঃ
● ইলেকট্রোড সাধারন তাপমাত্রায়, শুল্ক স্থানে রাখা।
● স্যাঁত স্যাঁতে মেঝেতে রাখা ঠিক নয়।
● বায়বীয় আদ্রতা মুক্ত হতে হবে।
● বিশেষ ধরনের বাক্সের মাধ্যমে সংরক্ষন করতে হবে।
এ.সি. আর্ক ওয়েল্ডিং মেশিন রক্ষণাবেক্ষণঃ
● বছরে কমপক্ষে ২ বার এয়ার কম্প্রেসারের মাধ্যমে ট্রান্সফরমার অংশ ভালোভাবে পরিস্কার করতে হবে।
● কোন তারের কানেকশন লুজ হয়েছে কি-না পরীক্ষা করতে হবে এবং ঠিক করতে হবে।
● ভেন্টিলেটিং ফ্যান এর বিয়ারিং গ্রিজিং করতে হবে।
গ্যাস ওয়েল্ডিং এর মেশিন ও সরঞ্জাম রক্ষণাবেক্ষণ আরও গুরুত্বপূর্ণ। গ্যাস নিয়ন্ত্রনের জন্য ব্যবহৃত যে কোন প্রেশার পার্টস নিয়মিত পরীক্ষা করা জরুরী। গ্যাস লিকেজের মাধ্যমে মারাত্বক দূর্ঘটনা ঘটতে পারে।
আরও পড়ুনঃ টিগ ওয়েল্ডিং ও মিগ ওয়েল্ডিং কাকে বলে? বিস্তারিত আলোচনা
ওয়েল্ডিং জোড়া (Welding Joint):
ওয়েল্ডিং প্রনালীর সাহায্যে যে সমস্ত জোড়া দেওয়া হয়, তাকে ওয়েল্ডিং জয়েন্ট বা জোড়া বলে।
ওয়েল্ডিং জোড়ার শ্রেনী বিভাগঃ
ওয়েল্ডিং জোড়া প্রধানত পাঁচ প্রকার যথাঃ-
১) বাট জয়েন্ট
২) ল্যাপ জয়েন্ট
৩) কর্ণার জয়েন্ট
৪) টি জয়েন্ট
৫) এজ জয়েন্ট
বাট জয়েন্টঃ
একই সমতলে দুইটি ধাতুকে মুখোমুখি অবস্থায় রেখে যে জোড়া দেওয়া হয় তাকে বাট জোড়া বলে।
ল্যাপ জয়েন্টঃ
একটি ধাতব খন্ডের উপর আরেকটি ধাতব খন্ড রেখে যে জোড়া দেওয়া হয় তাহাকে ল্যাপ জোড়া বলে।
কর্ণার জয়েন্টঃ
দুইটি ধাতব খন্ড বা পাতের প্রান্তভাগ কৌনিক অবস্থায় রেখে যে জোড়া দেওয়া হয় তাকে কর্ণার জয়েন্ট বলে। কোণের ভিতরের দিকে জোড়া দিলে তাকে ইনসাইড কর্ণার জোড়া বলে। আর কোণের বাইরের দিকে জোড়া দিলে আউট সাইড কর্ণার জোড়া বলে।
টি জয়েন্টঃ
একটি ধাতব খন্ডের উপর আর একটি ধাতব খন্ড এক সমকোনে রেখে যে জোড়া দেওয়া হয় তাকে টি জোড়া বলে।
এজ জয়েন্টঃ
দুইটি ধাতব খন্ডের পরস্পর সমান্তরাল বা প্রায় সমান্তরাল অবস্থায় কিনারায় যে জোড়া তৈরি করা হয়, তাকে এজ জোড়া বলে।
ওয়েল্ডিং এর পজিশন (Welding position):
যে অবস্থানে রেখে ওয়েল্ডিং করা হয় তাকে ওয়েল্ডিং এর পজিশন বলে। ওয়েল্ডিং এর পজিশন আর্ক ওয়েল্ডিং বা গ্যাস ওয়েল্ডিং উভয় ক্ষেত্রে সমান।
ওয়েল্ডিং পজিশন এর প্রকারভেদঃ
ওয়েল্ডিং এর অবস্থান বা পজিশন কে প্রধানত চার ভাগে ভাগ করা হয়েছে। যথা-
● ফ্লাট বা সমতল পজিশন
● হরাইজোন্টাল বা আনুভুমিক পজিশন।
● ভার্টিক্যাল বা উলম্ব/খাড়া পজিশন।
● ওভারহেড বা মাথার উপরে পজিশন।
এছাড়াও ইনক্লাইন্ড বা হেলানো পজিশন নামে আরও একটি পজিশন আছে।
ফ্লাট পজিশনঃ
এই পজিশনে প্লেট বা শীট গুলিকে সমতল জায়গায় রেখে ওয়েল্ডিং করা হয়। অনেক সময় এই পজিশন কে গ্রাউন্ড পজিশন বলে।
হরাইজন্টাল পজিশনঃ
এর সরল অর্থ হলো, দিগন্তের সমান্তরাল অবস্থানে রেখে ওয়েল্ডিং। এই অবস্থায় ওয়েল্ডিং করা খুব কঠিন কাজ। কেননা আগে থেকে কোন মেটাল মজুত থাকেনা বলে গলিত মেটালকে ধরে রাখা কঠিন।
ভার্টিক্যাল পজিশনঃ
যে পজিশন ওয়েল্ডিং লাইন ও ধাতুতল খাড়া অবস্থায় থাকে তাকে ভার্টিক্যাল পজিশন বলে।
ওভারহেড পজিশনঃ
ওয়েল্ড বস্তুকে মাথার উপর রেখে অর্থ্যাৎ ওয়ার্কের নিচে দাড়িয়ে এই পজিশনে ওয়েল্ডিং করতে হয়। এই পজিশনে ওয়েল্ডিং করা খুবই কষ্টকর।
ASME/AWS ওয়েল্ডিং পজিশন এর শ্রেণীবিভাগঃ
ASME/AWS পদ্ধতিতে প্লেট ওয়েল্ডিং পজিশনকে (ফিলেট জয়েন্ট) চারভাগে ভাগ করা হয়েছে। যথা-
● 1F- ফ্লাট পজিশনে ফিলেট জয়েন্ট।
● 2F- হরাইজোন্টাল পজিশন ফিলেট জয়েন্ট।
● 3F- ভার্টিক্যাল পজিশন ফিলেট জয়েন্ট।
● 4F- ওভারহেড পজিশন ফিলেট জয়েন্ট।
ASME/AWS পদ্ধতিতে প্লেট ওয়েল্ডিং পজিশনকে (গ্রুভ জয়েন্ট) চারভাগে ভাগ করা হয়েছে। যথা-
● ১ জি-ফ্লাট পজিশনে গ্রুভ জয়েন্ট।
● ২জি- হরাইজোন্টাল পজিশনে গ্রুভ জয়েন্ট।
● ৩ জি- ভার্টিক্যাল পজিশনে গ্রুভ জয়েন্ট।
● ৪ জি- ওভারহেড পজিশনে গ্রুভ জয়েন্ট।
ASME/AWS পদ্ধতিতে পাইপ ওয়েল্ডিং পজিশনকে চারভাগে ভাগ করা হয়েছে। যথা-
● ১ জি- ফ্লাট পজিশন
● ২ জি- হরাইজোন্টাল পজিশন (পাইপ স্থির)
● ৫ জি- ভার্টিক্যাল পজিশন (পাইপ স্থির)
● ৬ জি- ৪৫ ডিগ্রি কোনে (পাইপ স্থির)
ইলেকট্রোড (Electrode):
আর্ক এবং হোল্ডারের মধ্যে যে রডটি বিদ্যুৎ বহন করে তাকেই ইলেকট্রোড বলে। ইহা সাধারনত ১/১৬" থেকে ৩/৮" ব্যাসের হয় এবং ১২" থেকে ১৮" লম্বা হয়।
আরও পড়ুনঃ ইলেকট্রোড কাকে বলে? কত প্রকার ও কি কি? বিস্তারিত আলোচনা
ইলেকট্রোড এর প্রকারভেদঃ
ইলেকট্রোড প্রধানত দুই প্রকার। যথা-
● ক্ষয়শীল
● অক্ষয়শীল
ক্ষয়শীল ইলেকট্রোড দুই প্রকার। যথা-
● আবরনযুক্ত
● আবরন বিহীন
অক্ষয়শীল ইলেকট্রোড আবার দুই প্রকার।যথাঃ
● ট্যাংস্টেন ইলেকট্রোড
● কার্বন ইলেকট্রোড
ইলেকট্রোডকে সনাক্ত করণের জন্য তিনটি পদ্ধতি আছে। যথা-
● কালার ব্যান্ড পদ্ধতি।
● ফ্ল্যাক্স আবরনের রং দেখে।
● কোড নাম্বার বা সংখ্যার চাপ দেখে।
ইলেকট্রোড রক্ষনাবেক্ষনের সতর্কতাঃ
● ইলেকট্রোড সাধারন তাপমাত্রায়, শুষ্ক স্থানে রাখা।
● স্যাঁতস্যাঁতে মেঝেতে রাখা ঠিক নয়।
● বায়বীয় আদ্রতা মুক্ত হতে হবে।
● বিশেষ ধরনের বাক্সের মাধ্যমে সংরক্ষন করতে হবে।
ইলেকট্রোড নির্বাচন (Electrodes Selection):
ওয়েল্ডিং এর ক্ষেত্রে ইলেকট্রোড নির্বাচন খুবই গুরুত্বপূর্ণ। যেকোন মেটাল যেমন মাইল্ড স্টীল এবং কপার এ্যালুমিনিয়াম ব্রাশ ইত্যাদি ধাতুকে ওয়েল্ডিং করা হয়। ওয়েলডিং করার সময় উপযুক্ত ইলেকট্রোড বাছাই করতে হলে প্রথমে লক্ষ্য রাখতে হবে যে ইলেকট্রোড এবং বেস মেটালের কম্পোজিশন পরস্পরের অনুরুপ হয়। দ্বিতীয়ত মেটালের পুরুত্বের উপর নির্ভর করে ইলেকট্রোড নির্বাচন করতে হয়।
নিচের টেবিলে ইলেকট্রোড নির্বাচন-এর ছক দেওয়া হলঃ
ইলেকট্রোড নাম্বারিং ব্যাখ্যা (Explain Electrode Numbering):
মনে করি (E-৬০১২) একটি ইলেকট্রোড কোড নাম্বার। এর প্রথম অক্ষর দ্বারা ইলেকট্রোড বুঝাবে। দ্বিতীয় জোড়া শব্দ দ্বারা টানা শক্তি হাজার পাউন্ড হিসাবে প্রতি বর্গ ইঞ্চি বুঝাবে। তৃতীয় সংখ্যা দ্বারা পজিশন বুঝাবে। এবং চতুর্থ সংখ্যা দ্বারা কারেন্ট, কোটিং এবং পোলারিটি ইত্যাদি বুঝাবে।
E= ইলেকট্রোড আর্ক ওয়েল্ডিং।
৬০= টানা শক্তি অর্থ্যাৎ ৬০০০০ P.S.I
১= অল পজিশন বুঝায়। এখানে ২ থাকলে ফ্লাট এবং হরাইজোন্টাল বুঝাবে এবং ৩ থাকলে শুধুমাত্র ফ্লাট পজিশন বুঝাবে।
২= কারেন্ট এসি/ডিসি, টাইটেনিয়া সোডিয়াম, স্ট্রেইট পোলারিটি, এখানে উল্লেখ্য যে, শেষ সংখ্যা (০ থেকে ৮ পর্যন্ত হয়ে থাকে) সর্বশেষ সংখ্যা ০ থেকে ৮ পর্যন্ত সংখ্যার ব্যাখ্যা দেওয়া হলো।
ফিলেট এবং গ্রুভ এর বর্ণনা (Fillet and Groove):
ফিলেট কে F দ্বারা এবং গ্রুভ G দ্বারা প্রকাশ করা হয়।
ফিলেট (Fillet):
ওয়েল্ডিং জয়েন্টের মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপুর্ণ হলো ফিলেট জয়েন্ট। ফিলেট ওয়েল্ড সাধারনত দুটি প্লেটের ক্রস সেকশন অর্থ্যাৎ যে সমস্ত জয়েন্ট কোন না কোন এঙ্গেল (angle) সৃষ্টি করবে, সেই ক্রস সেকশন জয়েন্টকে ফিলেট ওয়েল্ড বা ফিলেট জয়েন্ট বলে। ফিলেট জয়েন্ট সাধারনত টি জয়েন্ট, ল্যাপ জয়েন্ট, কর্ণার জয়েন্ট প্রভৃতি ক্ষেত্রে হয়ে থাকে।
গ্রুভ (Groove):
গ্রুভ অর্থ কোন জবের কিনারা বা ধার ঢালু করা। গ্রুভ কে G দ্বারা প্রকাশ করা হয়। ওয়েল্ডিং জয়েন্টে ভাল পেনিট্রেশন পাওয়ার জন্য গ্রুভ করা হয়।
এই গ্রুভ প্রধানত সাত প্রকারের হয়ে থাকে। যথাঃ
1. V
2. Square
3. Bevel
4. U
5. J
6. Fare
7. Flare Bevel
আর্ক ওয়েল্ডিং (Arc Welding):
বিদ্যুৎ শক্তিকে তাপ শক্তিতে রুপান্তর পূর্ব ইলেকট্রোড ও মুল ধাতুর মধ্যবর্তী ফাকা স্থানটি প্রচন্ড তাপ সহ (তাপের পরিমান ১০০০০ ডিগ্রি-১১০০০ ডিগ্রি F) যে উজ্জ্বল আলোক রশ্মি সৃষ্টি হয় তাকে আর্ক বলে। আর্কের মাধ্যমে এক বা একাধিক ধাতুকে অর্ধ বা পূর্ণ গলিত অবস্থায় স্থায়ী ভাবে জোড়া দেওয়ার পদ্ধতিকে আর্ক ওয়েল্ডিং বলে।
আরও পড়ুনঃ আর্ক ওয়েল্ডিং কাকে বলে? কত প্রকার ও কি কি? বিস্তারিত আলোচনা
আর্ক ওয়েল্ডিং মেশিন (Arc welding machine):
এই পদ্ধতিতে বৈদ্যুতিক শক্তিকে তাপ শক্তিতে রূপান্তর করে ধাতব পদার্থ গলিয়ে দুটো মেটালকে একত্রিত করা হয়।
আরও পড়ুনঃ আর্ক ওয়েল্ডিং মেশিন সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা
আর্ক লেনথ (Arc Length):
আর্কের দৈর্ঘ্যকে আর্ক লেনথ বলে। অথবা যে পরিমান ফাকা জব এবং ইলেকট্রোডের মধ্যে বজায় রাখলে আর্ক তৈরি হয় সেই পরিমান ফাঁককে আর্ক লেনথ বলে।
আরও পড়ুনঃ আর্ক ওয়েল্ডিং জোড়ার বিভিন্ন ত্রুটিসমূহ নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা
আর্ক লেনথ-এর প্রকারভেদঃ
আর্ক লেনথ- প্রধানত দুই প্রকার যথা-
১. সর্ট আর্ক
২. লং আর্ক
সর্ট আর্কঃ ইলেকট্রোডের কোর ব্যাসের সমান গ্যাপ রেখে যে ওয়েল্ডিং করা হয় তাকে সর্ট আর্ক বলে।
লং আর্কঃ ইলেকট্রোডের কোন ব্যাসের থেকে বেশী গ্যাপে ওয়েল্ডিং করলে তাকে লং আর্ক বলে।
আর্ক লেংথ এর সুবিধা-অসুবিধাঃ
সর্ট আর্কের সুবিধাঃ
● ভাল পেনিট্রেশন হয়।
● জোড়া শক্তিশালী হয়।
● স্প্যাটার হয় না।
● স্লাগ ইনক্লুশানস হয় না।
● ওয়েল্ড মেটাল স্তুপ আকৃতি হয়না।
লং আর্কের অসুবিধাঃ
● ভাল পেনিট্রেশন হয় না।
● জোড়া শক্তিশালী হয় না।
● স্প্যাটার হয়।
● স্লাগ ইনক্লুশানস হয়।
● ওয়েল্ড মেটাল স্তুপ আকৃতি হয়।
CLASS এর পূর্ণ অর্থঃ
● C- কারেন্ট (Current)
● L- আর্কের দৈর্ঘ্য (Length of Arc)
● A-ইলেকট্রোড এর এঙ্গেল বা কোণ (Angle of Electrode)
● S- ওয়েল্ডিং এর গতি (Speed of Traveling)
● S- ইলেকট্রোড নির্বাচন (Selection of Electrode)
পাস (Pass) কত প্রকার ও কি কি?
পাস (Pass) কে প্রধানত তিন ভাগে ভাগ করা হয়। যথাঃ
১. রুট পাস (Root Pass)
২. হট পাস (Hot Pass)
৩. কভার পাস (Cover Pass)
রুট পাস (Root Pass): পাইপ কে ওয়েল্ডিং করার জন্য প্রথমে যে রানটি দেওয়া হয় তাকে রুট পাস বলে।
হট পাস (Hot Pass): দ্বিতীয় রানকে হট পাস বলে।
কভার পাস (Cover Pass): তৃতীয় রানকে কভার পাস বা ফিলিং পাস বলে।
পাওয়ার সেটিংঃ
ওয়েল্ডিং পাস (Weldig pass)
রুট গ্যাপ (Root Gap):
দুইটি জবের মধ্যবর্তী ফাকা স্থানে ইলেকট্রোডের কোর ব্যাসের সমান যে গ্যাপ রাখা হয় তাকে রুট গ্যাপ বলে।
রুট ফেস (Root Face):
বিভেল এঙ্গেলের যে অংশ ফিউশন মেটালের জন্য তৈরী করা হয় তাকে রুট ফেস বলে।
ভি এবং বিভেল এর মধ্যে পার্থক্য (Between V & Bevel) কি?
ভি (V):
১. দুইটি বিভেল এঙ্গেল একসাথে মিলিত হয়ে যে এঙ্গেল তৈরী হয় তাকে ভি বলে।
২. ভি এর এঙ্গেল থাকে ৬০ ডিগ্রিতে।
৩.ভি জবের দুই পাশের এঙ্গেল।
বিভেলঃ
১. গ্রুভ বা ফিলেট ওয়েল্ড তৈরির উদ্দেশ্যে যখন একটি জবে এঙ্গেল করা হয় তখন তাকে বিভেল বলে।
২. বিভেল এর এঙ্গেল থাকে ৩০ ডিগ্রিতে।
৩. বিভেল জবের এক পাশের এঙ্গেল।
৫জি ওয়েল্ডিং (5G welding):
বাট জয়েন্ট ভার্টিক্যাল পজিশনে (৫জি ওয়েল্ডিং) ওয়েল্ডারের সামর্থ যাচাই-এ ৫জি পজিশন ওয়েল্ডিং বেশি ব্যবহৃত হয়। এই পদ্ধতিতে ফিকচার বা যোগান ব্যবহার করতে হয়। ভূমির সঙ্গে সমান্তরাল রেখে স্ট্রিঞ্জার বা উইভিং মোশান কিংবা আপ হিল ও ডাউন হিল উভয় পদ্ধতিতে ওয়েল্ডিং করা যায়।৫জি পজিশনে পাইপ কে ঘুরানো বা মোচড়ানো যাবেনা। ওয়েল্ডারকে ঘুরেঘুরে ওয়েল্ডিং করতে হবে।
৫জি ওয়েল্ডিং করার জন্য নিম্নলিখিত বিষয়ের উপর নজর রাখতে হবে। যথাঃ-
● ৩.১৫ মি.মি. ব্যাসের-ই ৬০১০ বা ই-৬০১১ ইলেকট্রোড।
● প্রয়োজনীয় পাইপ সেকশন (সাধারনত ১০ সে: মি: বা তার বেশি ব্যাসের দুই খন্ড পাইপ) করে নিতে হবে।
● পাইপের প্রান্তদ্বয়কে ভি গ্রুভ করা।
● ফাইলিং করা।
● সঠিক স্থানে ট্যাগ দেওয়া।
● ঘড়ির কাটা বিপরীত দিকে ৬-ও ক্লক থেকে ওয়েল্ড শুরু করা।
● ইলেকট্রোড এর এঙ্গেল ৯০ ডিগ্রি এবং ড্রাগ কোনে ৫ ডিগ্রি- ১৫ ডিগ্রি ব্যবহার করা।
● ড্রাগ এঙ্গেল বজায় রাখা।
● ড্রাগ এঙ্গেল বজায় রেখে যথাসম্ভব ছোট আর্ক ব্যবহার করা।
● এইভাবে একপাশ সম্পূর্ণ হলে অপর পার্শ্বে একই নিয়মে ওয়েল্ডিং করে শেষ করতে হবে।
৬জি ওয়েল্ডিং (6G welding):
৪৫ ডিগ্রি কোনে স্থির অবস্থায় রেখে ওয়েল্ডার কে ঘুরে ঘুরে ওয়েল্ডিং করা কে বলা হয় ৬জি ওয়েল্ডিং। পাইপকে যে কোন পদ্ধতিতে ওয়েল্ডিং করার পূর্বে অবশ্যই ভালোভাবে প্রস্তুত ও সংস্থাপন করতে হবে। পুরুত্ব কম হলে স্কয়ার বাট জয়েন্ট ওয়েল্ডিং করতে হবে। বেশি হলে বিভেল বা ঢাল কোন ৬০-৭০ ডিগ্রি হবে।
রুট গ্যাপ এবং রুট ফেস সমান হবে এবং তা ১.৬ –৩.২ মি:মি: (পাইপের পুরুত্বের উপর ভিত্তি করে) হতে হবে। পাইপের ব্যাস ৬“ অথবা ১৫০ মি: মি; কম হলে তিনটি ট্যাগ এবং এর বেশি হলে চার জায়গায় ট্যাগ দিতে হবে। পাইপ ওয়েল্ডিং করতে কয়েকটি পাশ দিতে হবে। প্রথম পাশটির নাম হল রুট পাস। প্রথম পাশের পর চিপিং হ্যামার দিয়ে পরিষ্কার করে নিতে হবে।
রুট পাশের জন্য বি-৬০১০ বা ই-৬০১১ ইলেকট্রোড ব্যবহার করতে হবে। দ্বিতীয় পাশের নাম হট পাশ, হট পাস রুট পাসের চেয়ে একটু বেশি কারেন্ট লাগে। হট পাশের পর তৃতীয় পাশ ব্যবহার করতে হবে। একে ফিলার পাস বা কভার পাশ বলে। ইলেকটোডকে ৯০ ডিগ্রি কোণে ধরতে হবে এবং ড্রাগ ২০-৩০ ডিগ্রী হবে।
ঘড়ির কাটা ১২’ও' ক্লক থেকে শুরু করতে হবে। ৬’ও' ক্লক শেষ করতে হবে। এর পর বিপরীত দিক থেকে অনুরুপ ভাবে ওয়েল্ডিং করে কার্য সম্পাদন করতে হবে। কভার পাশ পাইপের দেয়াল থেকে ১-১.৫ মি: মি: বেশি উচু হবে।
গ্যাস ওয়েল্ডিং (Gas welding):
নিউট্রাল শিখা ও কার্বোরাইজিং শিখা / রিডিউসিং শিখা কি? তাপমাত্রা এবং কোন কোন ধাতু ওয়েল্ডিং-এ ব্যবহৃত হয়?
নিউট্রাল শিখাঃ
যে অক্সিএসিটিলিন গ্যাস শিখায় অক্সিজেন এবং এসিটিলিন গ্যাসের অনুপাত সমান থাকে অর্থ্যাৎ অক্সিজেন এবং এসিটিলিন এর অনুপাত ১:১ থাকে তখন তাকে নিউট্রাল বলে। এই শিখার গ্যাসই একক ভাবে ধাতুর উপর প্রভাব বিস্তার করতে পারে বলে একে নিউট্রাল শিখা বলে। নিউট্রাল শিখার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৫৮৫০ ডিগ্রি ফারেনহাইট। কার্য ক্ষেত্রে নিরপেক্ষ শিখাই বেশি ব্যবহৃত হয়।
ব্যবহারঃ নিউট্রাল শিখা ইস্পাত, , ঢালাই লোহা, এ্যালুমিনিয়াম এবং তামা ওয়েল্ডিং-এ ব্যবহৃত হয়।
কার্বুরাইজিং শিখা বা রিডিউসিং শিখাঃ
যে অক্সি-এসিটিলিন শিখায় অক্সিজেন এর চাইতে এসিটিলিন এর পরিমান বেশি ব্যবহার করা হয় তাকে কার্বুরাইজিং বা রিডিউসিং শিখা বলে। এই গ্যাস অক্সিজেন এবং এসিটিলিন গ্যাসের অনুপাত ০.৯:১ । ইহাতে কার্বনের পরিমান বেশি থাকে বলে এই শিখা ধাতুর উপরিভাগে শক্ত করার কাজে ব্যবহার করা হয়। কার্বুরাইজিং শিখার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৫৭০০ ডিগ্রি ফারেনহাইট।
ব্যাবহারঃ এসিটিলিন এর পরিমান তেমন বেশি না করে এই শিখা কে স্টেইনলেস ষ্টীল, মোনেল মেটাল, নিকেল কিছু এলন স্টীল এবং কিছু অলৌহজাত ধাতুকে ওয়েল্ডিং করতে ব্যবহৃত হয়।
আরও পড়ুনঃ গ্যাস ওয়েল্ডিং জোড়ার বিভিন্ন ত্রুটিসমূহ নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা
অক্সিডাইজিং শিখা কি? কি কি ধাতু ওয়েল্ডিং এ ব্যবহৃত হয়? এই শিখার তাপমাত্রা দেখাও?
অক্সিডাইজিং শিখাঃ
যে অক্সিএসিটিলিন শিখায় এসিটিলিনের সাহায্যে অক্সিজেন এর পরিমান বেশি থাকে তাকে অক্সিডাইজিং শিখা বলে। ইহাতে অক্সিজেন এবং এসিটিলিনের অনুপাত ১.৫:১। এই শিখা লম্বায় অপেক্ষাকৃত ছোট এবং জলন্ত অবস্থায় হালকা বেগুনী রং এর হয়। অক্সিজেন শিখার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৬৩০০ ডিগ্রী ফারেনহাইট।
ব্যবহারঃ এই শিখা দ্বারা ইস্পাতের উপর ওয়েল্ডিং করা যায় না কারন ইহার সংস্পর্শে আসিলে ইস্পাতের অক্সিজেন সংযোগ ঘটার সম্ভাবনা থাকে। এই শিখা দ্বারা তামা ও দস্তা সমৃদ্ধ ধাতুকে অল্প সংখ্যক লৌহজাত ধাতুকে যেমন: ম্যাঙ্গানিজ ইস্পাতকে ওয়েল্ডিং করা যায়।
আরও পড়ুনঃ গ্যাস ওয়েল্ডিং মেশিন সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা
ওয়েল্ডিং এর দোষত্রুটি (Welding defect):
যে কারনে ওয়েল্ডিং গ্রহন যোগ্য হয়না সেই বৈশিষ্ট্যগুলিকে ওয়েল্ডিং এর দোষ ত্রুটি বলে।
ওয়েল্ডিং এর ত্রুটি সমূহের শ্রেণী বিন্যাসঃ
ওয়েল্ডিং ত্রুটি সমূহকে বিভিন্ন শ্রেণীতে ভাগ করা যায়। যথা:-
১. আন্ডার কাট (Under Cut)
২. স্লাগ ইনক্লুশান (Slug Inclusion)
৩. ব্লো-হোল (Blow Hole)
৪. ছিদ্রতা (Porosity)
৫. স্প্যাটার (Spatter)
৬. ফাটল (Cracks)
৭. কম গলন (Poor Fusion)
৮. কম পেনিট্রেশন (Poor penetration)
৯. পুড়িয়া যাওয়া (Burn Through)
১০. ওভার ল্যাপিং (Over Lapping)
১১. উত্তল ও অবতল (Convexity & Concavity)
১২. বিকৃতি (Distortion)
১৩. আর্ক ক্রেটার (Arc Crater)
ওয়েল্ডিং ত্রুটির কারন ও প্রতিকারঃ
আন্ডার কাটঃ
ওয়েল মেটালের দৈর্ঘ্য বরাবর বা বিডের দৈর্ঘ্য বরাবর অসমান আকৃতি
কাটা বা গর্ত আকৃতি সৃষ্টি হলে তাকে আন্ডার কাট বলে।
কারনঃ
● তাপমাত্রা খুব বেশি হলে।
● ইলেকট্রোডের কোণ সঠিক না হলে।
● হাতের গতি সঠিক না হলে।
● কিনারায় বিরতি হলে।
প্রতিকারঃ
● সঠিক তাপমাত্রা বজায় রাখা।
● ইলেট্রোডের কোণ সঠিক হতে হবে।
● হাতের গতি সঠিক হতে হবে।
● কিনারায় বিরতি দেওয়া।
স্লাগ ইনক্লুশানসঃ
অনেক সময় দেখা যায় ওয়েল্ড মেটালের স্তরে স্তরে স্লাগ আটকিয়ে যায়, ফলে চিপিং করে উঠানো যায়না তাকেই স্লাগ ইনক্লুশানস বলে।
কারনঃ
● ইলেকট্রোড আদ্র হলে।
● অতি দীর্ঘ আর্ক।
● হাতের গতি ঠিক না হলে।
প্রতিকারঃ
● ইলেকট্রোড আদ্র মুক্ত হতে হবে।
● আর্ক লেংথ সঠিক হতে হবে।
● হাতের গতি ঠিক হতে হবে।
পুড়িয়া যাওয়া (Burn Through):
অতিরিক্ত তাপের ফলে জোড় স্থান পুড়ে গর্ত হয়, ফলে গলিত ওয়েল্ড মেটাল জোড় স্থানে না জমে নিচে পড়ে যায় তাকেই (Burn Through) বলে।
কারনঃ
● কারেন্ট খুব বেশি হলে।
● অতি দীর্ঘ আর্ক।
● হাতের গতি ধীর হলে।
প্রতিকারঃ
● কারেন্ট সঠিক হতে হবে।
● আর্ক লেংথ সঠিক হতে হবে।
● হাতের গতি সঠিক হতে হবে।
উত্তল ও অবতলঃ
ওয়েল্ড মেটাল খুব বেশি বা কম যুক্ত হওয়ায় ওয়েল্ড মেটালের আকৃতি সঠিক না হলে তখন উত্তল ও অবতল হয়।
কারনঃ
● কারেন্ট কম হলে (উত্তল)।
● হাতের গতি ধীর হলে।
● ইলেকট্রোডের এঙ্গেল ঠিক না হলে।
● কারেন্ট খুব বেশি হলে (অবতল)।
প্রতিকারঃ
● কারেন্ট সঠিক হতে হবে।
● হাতের গতি সঠিক হতে হবে।
● ইলেকট্রোডের এঙ্গেল ঠিক হতে হবে।
● কারেন্ট সঠিক হতে হবে।
বিকৃতিঃ
অসমভাবে উত্তপ্ত ও অসমভাবে ঠান্ডা হওয়ার কারনে মুলধাতু মোচড়ে বা বেকে গেলে বিকৃতি ঘটে।
কারনঃ
● অল্প ব্যাসের ইলেকট্রোড ব্যবহার করলে।
● খুব ধীর গতিতে ওয়েল্ডিং করা।
● জোড় প্রস্তুতি ঠিক না হওয়া ।
● প্রিহিটিং বা পোষ্ট হিটিং না করায় সংকোচনের ফলে।
প্রতিকারঃ
● সঠিক ব্যাসের ইলেকট্রোড ব্যবহার করতে হবে।
● হাতের গতি সঠিক হতে হবে।
● জোড় প্রস্তুতি সঠিক হতে হবে।
● প্রিহিটিং বা পোষ্ট হিটিং সঠিক হতে হবে।
আর্ক ক্রেটারঃ
ওয়েল্ড মেটাল ঘনীভূত হওয়ার সময় ইলেকট্রোড উঠিয়ে নিলে একটি খাদ এর সৃষ্টি হয় তাকেই আর্ক ক্রেটার বলে।
কারনঃ
● সংকোচনের ফলে বিকৃতি ঘটে।
● সারফেস টেনশন এর প্রভাবে।
প্রতিকারঃ
● সংকোচন মুক্ত হতে হবে।
● টেনশন মুক্ত হতে হবে।
স্প্যাটারঃ
গলিত ওয়েল্ড মেটাল ছিটকাইয়া বিন্দু বিন্দু আকারে পড়ে, ইহাই স্প্যাটার।
কারনঃ
● কারেন্ট খুব বেশি হলে।
● আর্ক লেংথ বেশি হলে।
● হাতের গতি সঠিক না হলে।
প্রতিকারঃ
● কারেন্ট সঠিক হতে হবে।
● আর্ক লেংথ সঠিক হতে হবে।
● হাতের গতি সঠিক হতে হবে।
ফাটলঃ
অনেক সময় ওয়েল্ড মেটালে চিড় দেখা যায়, যাহা ফাটল নামে পরিচিত।
কারনঃ
● তাপমাত্রা বেশি হলে।
● ওয়েল্ডিং পর্যায়ক্রম সঠিক না হলে।
● সঠিক ইলেকট্রোড ব্যবহার না করলে।
প্রতিকারঃ
● তাপমাত্রা সঠিক হতে হবে।
● ওয়েল্ডিং পর্যায়ক্রমে সঠিক হতে হবে।
● সঠিক ইলেকট্রোড ব্যবহার করা।
কম গলনঃ
ওয়েল্ড মেটাল এবং মুল ধাতুর মধ্যে যদি ল্যাক থাকে, তাকে কম গলন বলে। অর্থ্যাৎ ওয়েল্ড মেটাল মুল ধাতুর সাথে যদি না মিশে।
কারনঃ
● কারেন্ট খুব বেশি বা কম হলে।
● ইলেকট্রোড চালনার গতি সঠিক না হলে।
● মুল ধাতু অপরিষ্কার হলে।
● ওয়েল্ডিং ধাপ সমূহ সঠিক না হলে।
প্রতিকারঃ
● কারেন্ট সঠিক হতে হবে।
● ইলেকট্রোড চালনা সঠিক হতে হবে।
● মুল ধাতু পরিষ্কার হতে হবে।
● ধাপ সমুহ সঠিক হতে হবে।
ওভার ল্যাপঃ
মাত্রারিক্ত ওয়েল্ড মেটাল যখন মুল ধাতুর উপর জমে থাকে, তখন তাকে ওভার ল্যাপ বলে।
কারনঃ
● তাপমাত্রা অতি কম হলে।
● লং আর্কে ওয়েল্ডিং হলে।
● মুল ধাতু ময়লাযুক্ত হলে।
প্রতিকারঃ
● তাপমাত্রা সঠিক হতে হবে।
● আর্ক লেংথ সঠিক হতে হবে।
● মুল ধাতু পরিষ্কার হতে হবে।
আরও পড়ুনঃ ওয়েল্ডিং কাকে বলে? কত প্রকার ও কি কি? বিস্তারিত আলোচনা