গাড়ির রেডিয়েটর ভালো রাখার উপায়
রেডিয়েটরের কাজ কি?
রেডিয়েটরের কাজ গরম পানি ঠান্ডা করা।রেডিয়েটর হতে ঠান্ডা পানি পাম্পের সাহায্যে ওয়াটার জ্যাকেটের মাধ্যমে ইঞ্জিনের বিভিন্ন অংশে পৌঁছে ইঞ্জিনকে ঠান্ডা করে এবং গরম অবস্থায় পুনরায় রেডিয়েটরে ফিরে আসে। রেডিয়েটরে এই গরম পানি ঠান্ডা হয়ে পুনরায় ইঞ্জিনে যায়।
গাড়ির রেডিয়েটর ভালো রাখার উপায়
রেডিয়েটর হল গাড়ির একটি অপরিহার্য কুলিং ডিভাইস যা আপনার গাড়ির ইঞ্জিনের চারপাশে ঘুরে ইঞ্জিন ঠান্ডা রাখে। ধরুন, রেডিয়েটর অতিরিক্ত গরম হয়ে গেল এবং ব্যস্ত মহাসড়কে বা পারিবারিক ভ্রমণে বেরিয়ে আপনার গাড়ি নষ্ট হয়ে পড়ে রইল! পরিণামগুলি কল্পনা করুন, খুবই খারাপ অভিজ্ঞতা অর্জন করবেন। তাই এরকম পরিস্থিতিতে না পড়তে চাইলে গাড়ির এই গুরুত্বপূর্ণ জিনিসটি নিয়মিত পরীক্ষা করা উচিত।
আপনার গাড়ির রেডিয়েটর কীভাবে ঠিক রাখা যায় সে সম্পর্কে এখানে কিছু টিপস দেওয়া হলঃ-
১। কখনই এলোমেলোভাবে রেডিয়েটরের জন্য কুল্যান্ট নির্বাচন করবেন না। আপনি আপনার গাড়ির জন্য যে কুল্যান্ট ব্যবহার করছেন তার মান সম্পর্কে বিশেষভাবে সচেতন থাকুন। আপনার গাড়ির মডেল অনুযায়ী কুল্যান্ট কিনতে পারেন। দুটি আলাদা কুল্যান্ট একসাথে না মিশানোর পরামর্শ রইল।
২। দীর্ঘমেয়াদে আপনার গাড়ির রেডিয়েটর ভালো রাখতে আরেকটি দরকারী টিপস হল, নিয়মিত বিরতিতে ফ্লুইড চেক করা। গাড়িতে কুল্যান্টের সঠিক মাত্রা ঠিক রাখা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সঠিক লেভেলের তরল, আপনার ইঞ্জিনকে অতিরিক্ত গরমের পাশাপাশি হিমায়িত হওয়া থেকে বাঁচায়। ফলস্বরূপ, ইঞ্জিন আবহাওয়া দ্বারা প্রভাবিত হয় না।
৩। রেডিয়েটর গাড়ির ইঞ্জিন ঠান্ডা করতে সাহায্য করে। আপনি যদি আপনার গাড়িতে অতিরিক্ত বোঝা বহন করেন, তাহলে রেডিয়েটর ইঞ্জিন ঠান্ডা করতে বেশি সময় নেবে। বিশেষজ্ঞরা পরামর্শ দিচ্ছেন যে ইঞ্জিনের অতিরিক্ত গরম হওয়ার অন্যতম কারণ হল ওভারলোডিং। অতএব, আপনাকে অবশ্যই প্রস্তুতকারকের ম্যানুয়াল মেনে চলতে হবে এবং গাড়ির লোড সর্বনিম্ন রাখতে হবে।
৪। ফ্লুইড লেভেল পরীক্ষা করা ছাড়াও, যন্ত্রপাতির ভিতরে পানির লেভেল পরীক্ষা করাও সমান গুরুত্বপূর্ণ। প্রতি সপ্তাহে রেডিয়েটরের পানির লেভেল পরীক্ষা করুন। রেডিয়েটরের ভিতরে ঠান্ডা পানি দিবেন না, বিশেষ করে তার অপারেটিং তাপমাত্রার সময়। গাড়ি ঠান্ডা হওয়ার জন্য অপেক্ষা করার এবং তারপরে পানি যোগ করুন। ঠান্ডা পানি রেডিয়েটরের কর্মক্ষমতা নষ্ট করতে পারে। এটি অ্যালুমিনিয়াম সিলিন্ডারের উপরও বিরূপ প্রভাব ফেলতে পারে এবং ফাটল সৃষ্টি করতে পারে।
৫। গাড়িতে ইঞ্জিন কুল্যান্ট যুক্ত করার অনেক সুবিধা রয়েছে। এটি আপনার গাড়ির কুলিং সিস্টেমকে ঠান্ডায় জমে যেতে বাধা দেয় এবং এর বয়লিং পয়েন্টকেও কমিয়ে দেয়। ইঞ্জিন কুল্যান্টের নিয়মিত ব্যবহার, থার্মোস্ট্যাটের স্টিকিং প্রতিরোধ করে। তাই গাড়ির রেডিয়েটরের কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি পায়।
৬। গাড়ির কুলিং সিস্টেমের নিয়মিত ফ্লাশ নিশ্চিত করুন। আপনি কতদিনের ব্যবধানে রেডিয়েটার ফ্লাশ করতে চান তা এক মডেল থেকে অন্য মডেল ভিন্নতার উপর নির্ভর করে। বেশিরভাগ গাড়ির কুলিং সিস্টেম বছরে কমপক্ষে একবার ফ্লাশ করা জরুরি হয়ে পড়ে। আপনি যদি আপনার গাড়িকে খুব রাফলি ব্যবহার করেন এবং এক ট্রিপে অনেক দূরত্ব করতে হয়, তবে আপনাকে বছরে একবারের বেশি রেডিয়েটরকে ফ্লাশ করতে হবে। গাড়ী রেডিয়েটার ফ্লাশিং, ক্লোগিং এবং কণা জমতে বাধা দেয়। যেগুলো রেডিয়েটারের কর্মক্ষমতা কমিয়ে দেয়।
৭। শীতকালে যেহেতু রাস্তাঘাটে প্রচুর ধুলোবালি থাকে, তাই রেডিয়েটর নিয়মিত পরিষ্কার রাখা উচিত। এ ক্ষেত্রে ব্লোয়ার মেশিন ব্যবহার করে হাওয়া দিয়ে রেডিয়েটর ধুলোমুক্ত রাখা যায়। রেডিয়েটরে কুল্যান্ট ব্যবহার করলে ইঞ্জিন সহজেই উষ্ণ হয়। দিনের প্রথমে গাড়ি চালু করে কিছুক্ষণ অপেক্ষা করা উচিত। এতে ইঞ্জিন অয়েল সহজেই ইঞ্জিনে পৌঁছাতে পারে।
৮। হঠাৎ ঝামেলায় পড়া থেকে বাঁচতে, গাড়ীর রেডিয়েটারগুলি নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণ করা আবশ্যক। মনে রাখবেন, ত্রুটি এবং ড্যামেজ খুঁজে বের করতে গাড়ীর রেডিয়েটার পরিদর্শন করা কোন ছেলেখেলা নয়। প্রফেশনাল কারো সঙ্গে যোগাযোগ করুন এবং তাদের থেকে প্রয়োজনীয় সেবা নিন।
আরও পড়ুনঃ যে লক্ষণে বুঝবেন গাড়ির ইঞ্জিন ভালো নেই