গর্ভবতী মায়ের খাবার তালিকা
গর্ভবতী মায়ের খাবার তালিকাঃ
১। গর্ভবতী মায়েদের দিনে তিনবার মূল খাবারের পাশাপাশি দুইবার নাস্তা গ্রহণ করা উচিত।
২। স্বাভাবিকের তুলনায় এসময় দিনে ৩৫০ থেকে ৪৫০ ক্যালরি বেশি গ্রহণ করা প্রয়োজন।
৩। শিশুর স্বাভাবিকভাবে বেড়ে ওঠার জন্য এবং গর্ভবতী মায়ের সুস্থ-সবল থাকার জন্য প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় মাছ, মাংস, ডিম, ডাল জাতীয় খাদ্য থাকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
৪। আয়রন সমৃদ্ধ খাবার। যেমনঃ কাঁচা কলা, পালং শাক, কচু এসময় রক্তশূন্যতা প্রতিরোধ করে।
৫। সবুজ ও রঙিন শাকসবজি, ফলমূল শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে এবং কোষ্ঠকাঠিন্য প্রতিরোধ করে।
৬। গর্ভাবস্থায় সর্বদা আয়োডিনযুক্ত লবণ ও সম্ভব হলে সামুদ্রিক মাছ গ্রহণ করুন।
৭। এসময় প্রচুর পরিমাণে নিরাপদ পানি (দিনে ৮ থেকে ১০ গ্লাস) পান করুন।
৮। দুগ্ধজাত পণ্য যেমনঃ দুধ, দই বা দুধের তৈরি খাবার গর্ভের শিশুর হাড় ও দাঁত গঠনে সাহায্য করে।
৯। শর্করা জাতীয় খাদ্য। যেমনঃ ভাত, রুটি, নুডুলস মায়ের শরীরের শক্তির সবচেয়ে বড় উৎস।
১০। গর্ভাবস্থায় মা অপুষ্টিতে ভুগলে এর প্রভাব মা এবং সন্তান দুজনের উপরই সমানভাবে পড়ে। তাই গর্ভবতী মায়েদের সঠিক খাদ্যাভ্যাস মেনে চলা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
১১। ৪ বেলা খাবার খেলে গর্ভবতীর সুস্থতা মেলে গর্ভাবস্থায় কমপক্ষে ৪ বেলা সুষম খাবার খেলে নিরাপদ প্রসব ও সুস্থ শিশুর সম্ভাবনা বাড়ে।
গর্ভবতী মায়ের করণীয়ঃ
১। সামর্থ্য অনুযায়ী দিনে ৩-৪ বার সুষম খাবার খাবেন প্রতিবার খাওয়ার আগে ভালোভাবে হাত ধুয়ে নেবেন।
২। প্রতিদিন প্রচুর পরিমাণে নিরাপদ পানি পান করবেন।
৩। দিনের বেলায় কমপক্ষে ২ ঘণ্টা বিশ্রাম নেবেন।
৪। রাতে কমপক্ষে ৬-৮ ঘণ্টা ঘুমাবেন
৫। প্রতিদিন স্বাস্থ্যকর্মীর পরামর্শ অনুযায়ী আয়রন বড়ি/ট্যাবলেট খাবেন।
গর্ভবতী মায়ের সুষম খাবারের তালিকাঃ
১। ভাত বা রুটি।
২। ডিম/কলিজা/মাথাসহ ছোট মাছ/মুরগির মাংস।
৩। দুধ বা দুধের তৈরি পুষ্টিকর খাবার।
৪। যেকোনো ধরনের ডাল। যেমনঃ মসুর, মুগ, মটর, মাষকলাই, অড়হর ইত্যাদি।
৫। রঙিন ফল এবং শাক-সবজি যেমনঃ আম, কাঁঠাল, পাকা পেঁপে, কলা, পেয়ারা, পালং শাক, কচু শাক, মিষ্টি কুমড়া, শিমের বিচি, আয়োডিনযুক্ত লবণ ইত্যাদি।
গর্ভবতী মায়ের এই খাবার গুলো অবশ্যই খাওয়া উচিতঃ
আলো আন্ধারী (রাত কানা) খারাপ স্বাস্থ্যের একটি লক্ষণ। কোন মা চাহিদা মত ভিটামিন-এ যুক্ত খাবার। যেমনঃ কলিজা, দুধ, ডিমের কুসুম, মাথাসহ আস্ত ছোট মাছ, হলুদ বা রঙিন ফল অথবা শাক সবজি না খেলে গর্ভাবস্থায় এই লক্ষণ দেখা দেয়।
আলো আন্ধারী প্রতিরোধ বা চিকিৎসার জন্য আপনার প্রতিদিনের খাবার তালিকায় নীচের খাবারগুলির অন্তত একটি খাবেনঃ
১। কলিজা
২। রঙিন ও সবুজ শাক সবজি
৩। আস্ত ছোট মাছ
৪। ডিম
৫। দুধ বা পনির
৬। গাজর
৭। পাকা মিষ্টি কুমড়া
৮। পাকা পেপে
৯। পাকা আম
১০। পাকা তাল
১১। পাকা কাঁঠাল।
গর্ভবর্তী মায়ের পুষ্টির জন্য খাবার তালিকা ও কিছু টিপস্ঃ
১। ডিম, মাছ, মাংস, দুধ, কলা, ডাল, গাঢ় সবুজ শাক-সবজি ও মৌসুমী দেশী ফল খেতে হবে। রান্নায় যথেষ্ট পরিমাণ তেল ব্যবহার করতে হবে।
২। গর্ভের শিশুর কাঙ্খিত বৃদ্ধি নিশ্চিত করার জন্য দিনে অন্তত একবার মাছ, মাংস, ডিম অথবা দুধ খেতে হবে।
৩। গর্ভাবস্থায় আয়রন সমৃদ্ধ খাবার যেমনঃ- গাঢ় সবুজ শাকসবজি ও ভিটামিন এ সমৃদ্ধ খাবার যেমনঃ- হলুদ পা ও রঙিন শাকসবজি, ফলমূল বেশি পরিমাণে খেতে হবে।
৪। আয়োডিন যুক্ত লবণ খেতে হবে।
৫। গর্ভাবস্থায় যথেষ্ট পরিমাণে বিশ্রাম (দুপুরে খাবারের পর ২ ঘন্টা এবং রাতে ৮ ঘন্টা) নিতে হবে।
৬। গর্ভবর্তী নারীকে শারীরিক ও মানসিক প্রশান্তিতে রাখতে হবে, এতে গর্ভস্থ শিশুর বৃদ্ধি স্বাভাবিক হবে।
৭। পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকতে হবে।
৮। ভারী কাজ (যেমনঃ টিউবওয়েল চাপা, ধান ভানা, ভারী জিনিস তোলা, মসলা বাটা অতিরিক্ত ভারী কাপড় ধোয়া) এবং কষ্টকর কাজ থেকে বিরত থাকতে হবে।
গর্ভাবস্থায় প্রতিদিন ৩ বেলা খাবারের সাথে নিয়মিত কমপক্ষে এক মুঠো বেশি খাবার (সব ধরনের খাবার) খেতে হবে।
স্বামী ও পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের সাথে নিম্নোক্ত বার্তা নিয়ে আলোচনা করুনঃ
আপনার গর্ভবর্তী স্ত্রী/ছেলের বউ যেন প্রতিবেলায় অতিরিক্ত এক মুঠো পরিমাণ বিভিন্ন ধরনের খাবার খায় সেদিকে লক্ষ্য রাখুন। সেই সাথে আপনারা যেন দিনে ২-৩ ঘণ্টা বিশ্রাম নেয় এবং সংসারের ভারী বা ঝুঁকিপূর্ণ কাজ না করে সেদিকে নজর রাখুন এবং তাকে সাহায্য করুন।
গর্ভবতী মায়ের খাবার তালিকাই আয়রনঃ
১। এ অবস্থায় বেশি পরিমাণে আয়রন সমৃদ্ধ খাবার যেমন- মাংস, মাছ, কলিজা, ডিমের কুসুম, কঁচু শাক, পুঁই শাক, লাল শাক, পালং শাক, মিষ্টি কুমড়া শাক, সাজনা শাক, ধনিয়া পাতা, ফুলকপি পাতা, ছোলা শাক, হেলেঞ্চা শাক, ডাল ইত্যাদি খেতে হবে।
২। শরীরে আয়রন কাজে লাগানোর জন্য ভিটামিন সি যুক্ত বাবার যেমন- লেবু বা টক জাতীয় ফল খেতে হবে। গর্ভাবস্থায় ৩ মাসের পর থেকে প্রতিদিন সকালে ১টি এবং দুপুরে ১টি করে মোট ২ ক্যালসিয়াম ট্যাবলেট ভরা পেটে খেতে হবে।
৩। গর্ভধারনের প্রথম ৩ মাসের পর ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী ১ টি কৃমিনাশক ট্যাবলেট খেতে হবে।
৪। যদি আপনি কোন টিটি টিকা না দিয়ে থাকেন তাহলে টিকা শুরু করতে হবে এবং গর্ভাবস্থায় ৫ মাস পর ২ টি টিটি টিকা নিতে হবে, সিডিউল অনুযায়ী বাকি টিকাগুলো নিতে হবে। ৫। গর্ভাবস্থায় অন্তত ৪ বার গর্ভকালীন স্বাস্থ্য পরীক্ষা করতে হবে (মায়ের ওজন, রক্তস্বল্পতা, রক্তচাপ, গর্ভে শিশুর অবস্থান পরীক্ষা করা)।
৬। গর্ভাবস্থা নিশ্চিত হলে, সাথে সাথে স্বাস্থ্য কেন্দ্রে যান এবং আয়রন ট্যাবলেট সংগ্রহ করুন। এটি আপনাকে সুস্থ-সবল রাখতে এবং রক্তস্বল্পতা প্রতিরোধে সাহায্য করবে।
গর্ভাবস্থা নিশ্চিত হবার সাথে সাথে প্রতিদিন ১টি করে আয়রন ফলিক এসিড ট্যাবলেট খেতে হবে যা রক্তস্বল্পতা প্রতিরোধে সাহায্য করে।
গর্ভবতী মায়ের স্বাস্থ্য পরীক্ষার সময় সূচিঃ
১ম পরিদর্শনঃ ১৬ সপ্তাহ (৪ মাস)
২য় পরিদর্শনঃ ২৮ সপ্তাহ (৬-৭ মাস)
৩য় পরিদর্শনঃ ৩২ সপ্তাহ (৮ মাস)
৪র্থ পরিদর্শনঃ ৩৬ সপ্তাহ (১ মাস)
স্বামী ও পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের সাথে নিম্নোক্ত বার্তা নিয়ে আলোচনা করুনঃ
আপনার গর্ভবর্তী স্ত্রী যেন নিয়মিত আয়রন ট্যাবলেট যায় সেদিকে লক্ষ্য রাখুন এবং গর্ভকালীন সময়ে অন্ততপক্ষে ৪ বার স্বাস্থ্য-কেন্দ্রে নিয়ে যান।
দুগ্ধদানকারী মায়ের পুষ্টিঃ
১। দুগ্ধদানকারী মাকে সব ধরণের পুষ্টি সমৃদ্ধ (শক্তি, আমিষ, আয়রন, ভিটামিন-এ, আয়োডিন, ক্যালসিয়াম, পর্যাপ্ত পানি ইত্যাদি) খাবার যেমন- ভাত, ডিম, মাছ, মাংস, দুধ, কলিজা, ঘন ডাল, গাছ ও রঙিন সবুজ শাক সবজি ও মৌসুমী দেশী ফল খেতে হবে।
২। মায়ের শরীরের ক্ষত্র পূরণ ও অধিক দুধ উৎপাদনের জন্য দিনে অন্তত ১ বার মাছ, মাংস, ডিম অথবা দুধ খেতে হবে।
৩। প্রসবে পর ৩ মাস পর্যন্ত ১টি করে আয়রন ফলিক এসিড এবং ক্যালসিয়াম ট্যাবলেট প্রতিদিন ভরা পেটে খেতে হবে।
৪। এসময় মাকে প্রচুর পরিমাণে পানি পান করতে হবে।
৫। পর্যাপ্ত বিশ্রাম নিশ্চিত করতে হবে।
৬। শিশু জন্যের পর অন্তত ৪ বার প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত স্বাস্থ্যকর্মী দ্বারা প্রসব পরবর্তী স্বাস্থ্য পরীক্ষা করাতে হবে।
৭। শিশুর জন্মের ৪২ দিনের মধ্যে যত দ্রুত সম্ভব মাকে একটি উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন (২০০০০০ আই, ইউ) ভিটামিন এ ক্যাপসুল থেতে হবে।
প্রত্যেক বার খাবারের সময় প্রসূতি মাকে স্বাভাবিকের তুলনায় কমপক্ষে ২ মুঠো বেশি পরিমাণে এবং বারে বারে সব ধরণের খাবার খেতে হবে। অতিরিক্ত খাবার শিশুর জন্য মায়ের দুধ তৈরি করতে সহায়তা করে। এবং মায়ের নিজের শরীরের ঘাটতি পূরণ করে।
স্বামী ও পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের সাথে নিম্নোক্ত বার্তা নিয়ে আলোচনা করুনঃ
মা ও শিশুর সুস্থতার জন্য মা যেন সবধরনের খাবার বেশি পরিমাণে খায় সেদিকে লক্ষ্য রাখুন এবং মাকে ঘরের কাজে সহায়তা করুন যাতে সে পর্যন্ত বিশ্রাম পায়।
গর্ভবতী মায়ের প্রসবের পর চেকআপঃ
১ম চেকআপঃ ২৪ ঘন্টার মধ্যে।
২য় চেকআপঃ প্রসবের ২-৩ দিনের মধ্যে।
৩য় চেকআপঃ প্রসবের ৪-৭ দিনের মধ্যে।
৪র্থ চেকআপঃ প্রসবের ৪২-৪৫ দিনের মধ্যে।
পুষ্ট মায়েদের বাচ্চা স্বাস্থ্যবান হওয়ার সম্ভাবনা বেশিঃ
বালিকা ও মহিলাদের সরাজীবনই ভালো খাবার খাওয়া প্রয়োজন বিশেষত তাদের সন্তান গ্রহণের পরিকল্পনাকালীন সময়ে, গর্ভকালীন সময়ে অথবা স্তন্যদানকালীন সময়ে। যদি তারা স্বাস্থ্যকর, সুষম খাবার খায় তাহলে তারাঃ
১। সক্রিয় এবং ভালো থাকবে।
২। সুস্থ শিশুর জন্ম দেবে এবং সফলভাবে স্তন্য পান করাতে পারবে।
যদি কোনো মহিলা গর্ভবতী হওয়ার সময়ে বা গর্ভাবস্থায় অপুষ্ট থাকেন, তবে তাঁর গর্ভকালীন জটিলতা দেখা দিতে পারে ও প্রসব ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে। তাঁর শিশু জন্মের সময়ে কম ওজন (২৫০০ গ্রাম -এর কম) হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
এক্ষেত্রে শিশুরঃ
১। বৃদ্ধি ও গঠন ধীরে হতে পারে।
২। সংক্রমণের সম্ভাবনা থাকে।
৩। উচ্চ মৃত্যুর আশঙ্কা বেশি থাকে।
৪। রক্তস্বল্পতা, ভিটামিন-এ এবং জিঙ্কের অভাব হতে পারে।
৫। বয়সকালে হার্টের রোগ, উচ্চ রক্তচাপ, মোটা হয়ে যাওয়া ও ডায়াবেটিস হতে পারে।
জন্মকালীন কম ওজন হওয়ার অন্যান্য কারনগুলো হল সময়ের পূর্বেই জন্মানো, মায়ের ম্যালেরিয়া বা অন্য সংক্রমণ, মায়ের ধুমপান বা তামাক চিবানোর অভ্যাস, গর্ভাবস্থায় ঔষধের অপব্যবহার।
গর্ভবতী মায়ের দীর্ঘস্থায়ী খাবার বা পুষ্টি ঘাটতির পরিনতিঃ
১। মাতৃত্বকালীন জটিলতা এবং মৃত্যুর ঝুঁকি বাড়ে।
২। রোগ সংক্রমণ বাড়ার সুযোগ থাকে।
৩। রক্তস্বল্পতা দেখা দেয়।
৪। অবসন্নতা এবং দুর্বলতা উৎপাদনশীলতা কমিয়ে দেয়।
৪। বিঘ্নিত প্ৰসব।
৫। ভ্রুণ এবং নবজাতকের স্বাস্থ্য প্রভাবিত হয়।
৬। ভ্রুণ, সদ্যজাত ও নবজাতকের মৃত্যু সম্ভাবনা বাড়ায়।
৭। জরায়ু অভ্যন্তরে বিলম্বিত বৃদ্ধি, জন্মকালীন কম ওজন।
৮। সময়ের পূর্বেই নবজাতক জন্ম।
৯। জন্ম বৈকল্য।
১০। ক্রেটিনিজম (ভ্রুনের শারীরিক-মানসিক বৈকল্য)।
১১। মস্তিষ্কের ক্ষতি।
আমরা কি করে জানব যে একজন গর্ভবতী মায়ের খাবার যথেষ্ট পরিমান হচ্ছে কিনা?
একজন গর্ভবতী মহিলার সুস্বাস্থ্য এবং যথাযথ পুষ্টির বাস্তব নির্দেশক হল গর্ভাবস্থার সময়ে ওজন বৃদ্ধির হার এবং মোট ওজন বৃদ্ধি।
ওজন বৃদ্ধি হার প্রায়ঃ
প্রথম তিনমাস কালে ১.৫ কি.গ্রাম।
দ্বিতীয় তিনমাস কালে ২.৭ থেকে ৩ কি.গ্রাম।
তৃতীয় তিনমাস কালে ২ কি.গ্রাম।
গর্ভবতী মায়ের খাবার বা পুষ্টির প্রয়োজনীয়তাঃ
কোনো মহিলার শক্তিদায়ক এবং অন্যান্য পুষ্টি উপাদানের চাহিদা গর্ভাবস্থায় এবং দুধদানকারী অবস্থায় সবচেয়ে বেশি। বাড়ন্ত ভ্রুনের চাহিদা মেটাতে বিভিন্ন প্রকারের খাদ্য অতিরিক্ত পরিমানে প্রয়োজন হয়। গর্ভাবস্থায় গর্ভবতী মহিলা পুষ্টির চাহিদা মেটাতে শরীরে চর্বি জমানো বাড়িয়ে নিজেকে প্রস্তুত করে। গর্ভাবস্থায় লৌহের চাহিদা এত বেশি থাকে যে আয়রন/ ফলিক এসিডের মত লৌহ সম্পূরক দেওয়ার পরামর্শ দেওয়া উচিৎ।
গর্ভবতী মহিলার বেশি পরিমাণে শক্তি, আমিষ, জিঙ্ক, ভিটামিন-এ, ভিটামিন-সি ও ফোলেট এবং প্রচুর পরিমাণে লৌহ (মাংস, পোলট্রি, মাছ, ডিম, গোটা শস্য, শিম, ছোলা, পালং, সবুজ শাক সবজি) প্রয়োজন। প্রথম তিনমাস সহ সম্পূর্ণ গর্ভাবস্থার সময়ই ভালো খাওয়া গুরত্বপূর্ণ যাতে শিশুর দেহ ও মস্তিষ্ক সঠিকভাবে গঠিত হয়।
সকল গর্ভবতী মায়ের খাবার তালিকাই যা যা রাখা উচিৎঃ
১। গর্ভকালে পারিবারিক খাদ্যের মধ্যে একটি অতিরিক্ত সহায়ক খাদ্য খাওয়া। তার পুষ্টি উপাদানের ভাণ্ডার তৈরি করতে তাকে অবশ্যই প্রচুর পরিমাণে সবুজ শাক সবজি, ডাল, মাছ, গুড়, বাদাম এবং দুধ খেতে হবে। এছাড়াও তার শস্যদানা, বাদাম এবং কিছু পরিমাণ চিনি, গুড়, চর্বি ও তেল জাতীয় শক্তি সমৃদ্ধ খাবার প্রয়োজন।
২। একজন গর্ভবতী মহিলার যথেষ্ট পরিমাণে (পরিমাণগত ও গুণগত উভয় অর্থেই) পুষ্টিকর খাবার খাওয়া নিশ্চিত করতে হবে। গর্ভাবস্থায় কোনো খাবারেই নিষেধ নেই।
৩। আয়োডিনযুক্ত লবণ খান। যে সকল মহিলার আয়োডিনের ঘাটতি আছে এবং তাঁরা যখন গর্ভধারণ করেন, তাঁদের শারীরিক ও মানসিক বৈকল্যযুক্ত শিশু হওয়ার আশঙ্কা বাড়ে।
৪। শক্তি সংরক্ষণের জন্য কাজের চাপ কমিয়ে সাধারণ অবস্থায় তুলনায় বেশি বিশ্রাম করুন।
৫। গর্ভকালে কমপক্ষে ১০০ আয়রন / ফলিক এসিড ট্যাবলেট গ্রহণ করুন।
আরও পড়ুনঃ শিশুদের মধ্যে অপুষ্টি: কারণ, লক্ষণ এবং প্রতিকার