নন ফিউশন ওয়েল্ডিং কাকে বলে? কত প্রকার ও কি কি? বিস্তারিত জানুন
নন ফিউশন ওয়েল্ডিং কাকে বলে?
নন-ফিউশন ওয়েল্ডিং (Non-fusion welding) এমন এক ধরনের ওয়েল্ডিং পদ্ধতি, যেখানে ধাতব পদার্থকে গলিয়ে একত্রিত করা হয় না। এটি একটি ওয়েল্ডিং প্রক্রিয়া যেখানে দুটি ধাতব অংশকে গলিয়ে একত্রিত করার পরিবর্তে, অন্য কোনো পদ্ধতিতে জোড়া দেওয়া হয়।
অর্থাৎ, এই প্রক্রিয়ায় ধাতব টুকরোগুলিকে গলানোর প্রয়োজন হয় না, বরং চাপ, তাপ বা অন্য কোনো প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সংযোগ করা হয়।
আরও পড়ুনঃ টিগ ওয়েল্ডিং ও মিগ ওয়েল্ডিং কাকে বলে? বিস্তারিত আলোচনা
নন-ফিউশন ওয়েল্ডিং এর প্রকারভেদ
নন-ফিউশন ওয়েল্ডিং হল এমন একটি প্রক্রিয়া যেখানে দুটি ধাতুকে গলিয়ে একত্রিত করার পরিবর্তে, অন্য কোনো পদ্ধতিতে জোড়া দেওয়া হয়। এই প্রক্রিয়ায় ধাতুগুলোর পরমাণুগুলো একে অপরের সাথে মিশে যায় না। পরিবর্তে, একটি মেকানিক্যাল বা কেমিক্যাল বন্ধন তৈরি হয়।
নন-ফিউশন ওয়েল্ডিং এর প্রধান প্রকারভেদগুলি হল:
১. ব্রেজিং (Brazing):
একটি ফিলার মেটাল ব্যবহার করা হয়, যা একটি নির্দিষ্ট তাপমাত্রায় গলে যায় এবং দুটি ধাতব অংশকে জোড়া দেয়। ফিলার মেটালের গলনাঙ্ক মূল ধাতুগুলোর গলনাঙ্কের চেয়ে কম হয়।
ব্যবহার: ইলেকট্রনিক্স, অটোমোবাইল, এবং অন্যান্য শিল্পে ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হয়।
২. সোল্ডারিং (Soldering):
ব্রেজিংয়ের মতোই, সোল্ডারিংয়েও একটি ফিলার মেটাল (সোল্ডার) ব্যবহার করা হয়। তবে, সোল্ডারের গলনাঙ্ক ব্রেজিংয়ের ফিলার মেটালের চেয়ে আরও কম হয়।
ব্যবহার: ইলেকট্রনিক্স, প্লাম্বিং, এবং অন্যান্য সূক্ষ্ম কাজে ব্যবহৃত হয়।
৩. মেকানিক্যাল ফাস্টনিং (Mechanical Fastening):
বোল্ট, নাট, স্ক্রু ইত্যাদি ব্যবহার করে দুটি ধাতব অংশকে জোড়া দেওয়া হয়।
ব্যবহার: নির্মাণ, অটোমোবাইল, এবং অন্যান্য শিল্পে ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হয়।
৪. রিভেটিং (Riveting):
রিভেট নামক একটি ধাতব পিন ব্যবহার করে দুটি ধাতব অংশকে জোড়া দেওয়া হয়।
ব্যবহার: বিমান, জাহাজ নির্মাণ, এবং অন্যান্য শিল্পে ব্যবহৃত হয়।
৫. ক্লিপিং (Clipping):
বিশেষ ধরনের ক্লিপ ব্যবহার করে দুটি ধাতব অংশকে জোড়া দেওয়া হয়।
ব্যবহার: অটোমোবাইল, ইলেকট্রনিক্স, এবং অন্যান্য শিল্পে ব্যবহৃত হয়।
৬. প্রেসার ওয়েল্ডিং (Pressure Welding):
এই পদ্ধতিতে চাপ বা বল প্রয়োগ করে দুই ধাতব পদার্থকে সংযুক্ত করা হয়। তাপের সাহায্যেও এই প্রক্রিয়া চালানো যায়। এর উদাহরণ হলো স্পট ওয়েল্ডিং, যেখানে দুটি ধাতব শিটকে চাপ ও বিদ্যুতের মাধ্যমে যুক্ত করা হয়।
৭. আল্ট্রাসনিক ওয়েল্ডিং (Ultrasonic Welding):
উচ্চ ফ্রিকোয়েন্সির শব্দ তরঙ্গ ব্যবহার করে ধাতু বা প্লাস্টিকের অংশকে সংযুক্ত করা হয়। এতে তাপ উৎপন্ন হয় না, তবে কম্পনের মাধ্যমে অংশগুলো সংযুক্ত হয়।
ব্যবহার: প্লাস্টিক বা হালকা ধাতুর অংশ সংযুক্ত করতে ব্যবহার হয়, যেমন ফুয়েল ফিল্টার এবং ইলেকট্রনিক সেন্সর।
৮. ফ্রিকোয়েন্সি ওয়েল্ডিং (Friction Welding):
দুই ধাতব পদার্থের মধ্যে ঘর্ষণ সৃষ্টি করে তাপ উৎপন্ন করা হয়, যা তাদের একত্রিত করে। এতে গলন প্রয়োজন হয় না।
৯. এডহেসিভ বন্ডিং (Adhesive Bonding):
এখানে ধাতব অংশগুলোকে আঠা বা অন্য কোনো রাসায়নিক উপাদানের সাহায্যে সংযুক্ত করা হয়। এটি প্রায়শই বিভিন্ন ধাতব বা ধাতু-নন ধাতু উপকরণ সংযোগ করতে ব্যবহৃত হয়।
এই প্রক্রিয়াগুলিতে তাপ এবং চাপের মিশ্রণ ব্যবহার করে জোড়া তৈরি করা হয়, কিন্তু ধাতব অংশগুলো গলিয়ে ওয়েল্ডিং করা হয় না, তাই এগুলোকে নন-ফিউশন ওয়েল্ডিং বলা হয়।
আরও পড়ুনঃ থার্মিট ওয়েল্ডিং কাকে বলে? থার্মিট ওয়েল্ডিং কত প্রকার ও কি কি? বিস্তারিত আলোচনা
নন-ফিউশন ওয়েল্ডিং এর ব্যবহার
নন-ফিউশন ওয়েল্ডিং, যেখানে ধাতুগুলিকে গলানো হয় না, তাদের বিভিন্ন ধরনের জোড় দেওয়ার ক্ষেত্রে ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হয়। এর কারণ হল এর সুবিধাগুলি যেমন কম তাপ, সহজ প্রক্রিয়া, এবং বিভিন্ন ধরনের ধাতুকে জোড়া দেওয়ার ক্ষমতা।
নন-ফিউশন ওয়েল্ডিং এর কিছু প্রধান ব্যবহার:
1. ইলেকট্রনিক্স: সার্কিট বোর্ডে উপাদানগুলিকে জোড়া দেওয়ার জন্য সোল্ডারিং প্রায়শই ব্যবহৃত হয়। এর কারণ হল এটি সূক্ষ্ম কাজের জন্য উপযুক্ত এবং কম তাপে সম্পন্ন করা যায়।
2. অটোমোবাইল: অটোমোবাইলে বিভিন্ন ধাতব অংশকে জোড়া দেওয়ার জন্য ব্রেজিং এবং মেকানিক্যাল ফাস্টনিং ব্যবহৃত হয়।
3. গাড়ি ও অটোমোটিভ শিল্প: ফ্রিকশন ওয়েল্ডিং এবং স্পট ওয়েল্ডিং গাড়ির অংশ, যেমন চেসিস এবং বডি অংশ একত্রিত করতে ব্যবহৃত হয়। এই পদ্ধতিগুলি দ্রুত এবং কার্যকরভাবে ধাতব অংশ সংযুক্ত করতে সহায়ক।
4. নির্মাণ: বিল্ডিং এবং স্ট্রাকচারে বিভিন্ন ধাতব অংশকে জোড়া দেওয়ার জন্য বোল্ট, নাট এবং রিভেট ব্যবহৃত হয়।
5. প্লাম্বিং: পাইপ এবং ফিটিংগগুলিকে জোড়া দেওয়ার জন্য সোল্ডারিং ব্যবহৃত হয়। সোল্ডারিং এবং ব্রেজিং প্রক্রিয়া পানির পাইপ, বিশেষ করে তামার পাইপগুলোকে সংযুক্ত করতে ব্যবহৃত হয়। এতে টাইট ফিটিং তৈরি করা হয় যা পানির লিক থেকে রক্ষা করে।
6. বিমান: বিমানের বিভিন্ন অংশকে জোড়া দেওয়ার জন্য রিভেটিং এবং ব্রেজিং ব্যবহৃত হয়।
7. জাহাজ নির্মাণ: জাহাজের বিভিন্ন অংশকে জোড়া দেওয়ার জন্য রিভেটিং ব্যবহৃত হয়।
8. প্যাকেজিং শিল্প: প্যাকেজিং উপকরণগুলিকে জোড়া দেওয়ার জন্য ক্লিপিং ব্যবহৃত হয়। এছাড়াও আল্ট্রাসনিক ওয়েল্ডিং বিভিন্ন প্যাকেজিং উপকরণ, যেমন প্লাস্টিক ফয়েল বা ফিল্ম সংযুক্ত করতে ব্যবহৃত হয়। এটি বিশেষ করে খাদ্য প্যাকেজিংয়ে ব্যবহার করা হয়, যেখানে সিলিং করতে দ্রুত এবং পরিচ্ছন্ন পদ্ধতি প্রয়োজন।
9. অপ্টিক্যাল ফাইবার এবং টেলিযোগাযোগ: আল্ট্রাসনিক ওয়েল্ডিং অপটিক্যাল ফাইবার এবং মাইক্রোইলেকট্রনিক উপাদান সংযোগের জন্য ব্যবহৃত হয়, যেখানে উচ্চ নির্ভুলতা এবং সংবেদনশীল উপাদান সংযোগ প্রয়োজন।
10. জুয়েলারি শিল্প: সোল্ডারিং এবং ব্রেজিং ধাতুর ক্ষুদ্র অংশ, যেমন সোনার বা রূপার গয়না তৈরি করতে ব্যবহৃত হয়, যেখানে সূক্ষ্ম এবং শক্ত সংযোগ দরকার।
11.গৃহস্থালির সরঞ্জাম ও আসবাবপত্র: আঠালো বন্ডিং (Adhesive Bonding) কাঠ, প্লাস্টিক, এবং মেটাল ফিটিং সংযোগ করতে ব্যবহৃত হয়, যা আসবাবপত্র এবং গৃহস্থালির সরঞ্জামে ব্যবহৃত হয়।
12. এভিয়েশন ও এরোস্পেস শিল্প: ব্রেজিং এবং ফ্রিকশন ওয়েল্ডিং বিমানের বিভিন্ন উপাদান সংযুক্ত করতে ব্যবহৃত হয়, বিশেষত যেখানে শক্তিশালী এবং টেকসই সংযোগের প্রয়োজন।
কেন নন-ফিউশন ওয়েল্ডিং ব্যবহার করা হয়?
কম তাপ: ফিউশন ওয়েল্ডিংয়ের তুলনায় কম তাপ ব্যবহার করা হয়, ফলে ধাতুটির ভৌত বৈশিষ্ট্য পরিবর্তনের সম্ভাবনা কম থাকে। এটি বিশেষ করে ইলেকট্রনিক্স এবং সূক্ষ্ম যন্ত্রপাতির ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ।
সহজ এবং দ্রুত: ফিউশন ওয়েল্ডিংয়ের তুলনায় সাধারণত সহজ এবং দ্রুত।
কম খরচ: সাধারণত ফিউশন ওয়েল্ডিংয়ের তুলনায় কম খরচ হয়।
বিভিন্ন ধরনের ধাতুকে জোড়া দেওয়া: বিভিন্ন ধরনের ধাতুকে জোড়া দেওয়া যায়।
ফিউশন ও নন ফিউশন ওয়েল্ডিং এর পার্থক্য কি?
ওয়েল্ডিং হল একটি প্রক্রিয়া যেখানে দুটি ধাতব অংশকে একত্রিত করে একটি অবিচ্ছেদ্য যোগসূত্র তৈরি করা হয়। এই প্রক্রিয়াটি মূলত দুই ধরনের হতে পারে: ফিউশন ওয়েল্ডিং এবং নন-ফিউশন ওয়েল্ডিং। নন-ফিউশন ওয়েল্ডিং এবং ফিউশন ওয়েল্ডিং উভয়ই ধাতু সংযোগের পদ্ধতি, কিন্তু তাদের মধ্যে কয়েকটি মৌলিক পার্থক্য রয়েছে।
এই পার্থক্যগুলি নিম্নরূপ:
1. গলনাংক:
- ফিউশন ওয়েল্ডিং: বেস মেটাল গলনাংক পর্যন্ত উত্তপ্ত করা হয়।
- নন-ফিউশন ওয়েল্ডিং: বেস মেটাল গলনাংকের নিচে থাকে।
2. তাপ প্রয়োগ:
- ফিউশন ওয়েল্ডিং: উচ্চ তাপ প্রয়োগ করা হয়।
- নন-ফিউশন ওয়েল্ডিং: কম তাপ বা কখনও কখনও তাপ ছাড়াই।
3. বেস মেটালের অবস্থা:
- ফিউশন ওয়েল্ডিং: বেস মেটাল আংশিক বা সম্পূর্ণ গলে যায়।
- নন-ফিউশন ওয়েল্ডিং: বেস মেটাল কঠিন অবস্থায় থাকে।
4. ফিলার মেটাল:
- ফিউশন ওয়েল্ডিং: প্রায়ই বেস মেটালের মতো ফিলার ব্যবহৃত হয়।
- নন-ফিউশন ওয়েল্ডিং: ভিন্ন গলনাংকের ফিলার বা কখনও ফিলার ছাড়াই।
5. জোড়ের শক্তি:
- ফিউশন ওয়েল্ডিং: সাধারণত অধিক মজবুত জোড়।
- নন-ফিউশন ওয়েল্ডিং: তুলনামূলকভাবে কম মজবুত, তবে পর্যাপ্ত।
6. বিকৃতি:
- ফিউশন ওয়েল্ডিং: অধিক তাপীয় বিকৃতি ঘটে।
- নন-ফিউশন ওয়েল্ডিং: কম বা নগণ্য বিকৃতি।
7. ভিন্ন ধাতু সংযোগ:
- ফিউশন ওয়েল্ডিং: সীমিত ক্ষেত্রে সম্ভব।
- নন-ফিউশন ওয়েল্ডিং: বিভিন্ন ধাতু সহজে সংযোগ করা যায়।
8. প্রয়োগ ক্ষেত্র:
- ফিউশন ওয়েল্ডিং: ভারী শিল্প, নির্মাণ কাজ।
- নন-ফিউশন ওয়েল্ডিং: ইলেকট্রনিক্স, জুয়েলারি, সূক্ষ্ম কাজ।
9. দক্ষতার প্রয়োজন:
- ফিউশন ওয়েল্ডিং: উচ্চ দক্ষতা প্রয়োজন।
- নন-ফিউশন ওয়েল্ডিং: তুলনামূলকভাবে কম দক্ষতা প্রয়োজন।
10. প্রক্রিয়া সময়:
- ফিউশন ওয়েল্ডিং: সাধারণত ধীর প্রক্রিয়া।
- নন-ফিউশন ওয়েল্ডিং: অনেক ক্ষেত্রে দ্রুত।
11. পরিবেশগত প্রভাব:
- ফিউশন ওয়েল্ডিং: অধিক শক্তি ব্যবহার, বেশি নির্গমন।
- নন-ফিউশন ওয়েল্ডিং: কম শক্তি ব্যবহার, কম নির্গমন।
12. পৃষ্ঠতলের প্রস্তুতি:
- ফিউশন ওয়েল্ডিং: মাঝারি থেকে উচ্চ প্রস্তুতি প্রয়োজন।
- নন-ফিউশন ওয়েল্ডিং: অত্যন্ত নিখুঁত পৃষ্ঠতল প্রয়োজন।
বৈশিষ্ট্য | ফিউশন ওয়েল্ডিং | নন-ফিউশন ওয়েল্ডিং |
---|---|---|
ধাতু গলানো | হ্যাঁ | না |
পরমাণু মিশ্রণ। | হ্যাঁ | না |
বন্ধন | মেটালার্জিক্যাল | মেকানিক্যাল বা কেমিক্যাল। |
উদাহরণ | আর্ক ওয়েল্ডিং, গ্যাস ওয়েল্ডিং। | ব্রেজিং, সোল্ডারিং। |
শক্তি | সাধারণত বেশি শক্তিশালী। | সাধারণত কম শক্তিশালী। |
ব্যবহার | নির্মাণ, অটোমোবাইল। | ইলেকট্রনিক্স, প্লাম্বিং। |
নন-ফিউশন ওয়েল্ডিং এর সুবিধা ও অসুবিধা
নন-ফিউশন ওয়েল্ডিং হল একটি গুরুত্বপূর্ণ ওয়েল্ডিং প্রক্রিয়া যেখানে ধাতুগুলোকে গলানো হয় না, বরং অন্য কোনো পদ্ধতিতে জোড়া দেওয়া হয়। এই প্রক্রিয়াটির নিজস্ব কিছু সুবিধা ও অসুবিধা রয়েছে। নিচে এই পদ্ধতির প্রধান সুবিধা ও অসুবিধা ব্যাখ্যা করা হলো:
নন-ফিউশন ওয়েল্ডিং এর সুবিধাঃ
1. কম তাপ: ফিউশন ওয়েল্ডিংয়ের তুলনায় নন-ফিউশন ওয়েল্ডিংয়ে কম তাপ ব্যবহার করা হয়। ফলে ধাতুটির ভৌত বৈশিষ্ট্য পরিবর্তনের সম্ভাবনা কম থাকে। এটি বিশেষ করে ইলেকট্রনিক্স এবং সূক্ষ্ম যন্ত্রপাতির ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ।
2. কম বিকৃতি: তাপমাত্রা কম থাকায় ধাতব অংশগুলোতে তাপের কারণে বিকৃতি (distortion) বা ক্ষতি কম হয়, যা বিশেষ করে জটিল বা ক্ষুদ্র উপাদানের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ।
3. বিভিন্ন ধাতু সংযুক্ত করা সম্ভব: ব্রেজিং এবং সোল্ডারিংয়ের মাধ্যমে বিভিন্ন ধাতু, এমনকি ভিন্ন গলনাঙ্কের ধাতু একত্রিত করা সম্ভব, যা ফিউশন ওয়েল্ডিংয়ে সবসময় সহজ নয়।
4. সহজ এবং দ্রুত: ফিউশন ওয়েল্ডিংয়ের তুলনায় সাধারণত সহজ এবং দ্রুত।
5. গ্যাস সুরক্ষা প্রয়োজন হয় না: ফিউশন ওয়েল্ডিংয়ে প্রায়শই সুরক্ষা গ্যাস ব্যবহার করতে হয়, কিন্তু নন-ফিউশন প্রক্রিয়াগুলিতে সাধারণত এটি প্রয়োজন হয় না, যা খরচ কমায়।
6. মাইক্রো ওয়েল্ডিং সম্ভব: নন-ফিউশন পদ্ধতি যেমন সোল্ডারিং বা আল্ট্রাসনিক ওয়েল্ডিং, খুব ক্ষুদ্র এবং সূক্ষ্ম উপাদান সংযুক্ত করতে সক্ষম, যা ইলেকট্রনিক্স ও মাইক্রোপ্রসেসিংয়ে গুরুত্বপূর্ণ।
7. কম খরচ: সাধারণত ফিউশন ওয়েল্ডিংয়ের তুলনায় কম খরচ হয়।
8. বিভিন্ন ধরনের ধাতুকে জোড়া দেওয়া: বিভিন্ন ধরনের ধাতুকে জোড়া দেওয়া যায়।
9. পরিবেশবান্ধব: কিছু ক্ষেত্রে ফিউশন ওয়েল্ডিংয়ের তুলনায় পরিবেশবান্ধব।
নন-ফিউশন ওয়েল্ডিং এর অসুবিধাঃ
1. শক্তি: ফিউশন ওয়েল্ডিংয়ের তুলনায় জোড়টি সাধারণত কম শক্তিশালী হয়। ফিউশন ওয়েল্ডিংয়ের তুলনায় নন-ফিউশন ওয়েল্ডিংয়ের মাধ্যমে সংযোগ সাধারণত কম শক্তিশালী হয়। উচ্চ চাপ বা ভারী লোডের অধীনে এটি ভেঙে যেতে পারে।
2. তাপ সহ্যক্ষমতা কম: সোল্ডারিং বা ব্রেজিংয়ের মাধ্যমে তৈরি সংযোগগুলো উচ্চ তাপমাত্রায় শক্তি হারায় বা ভেঙে যেতে পারে, কারণ গলনাঙ্ক কম হয়। তাই এগুলো তাপ-প্রবণ পরিবেশে কম কার্যকর।
3. পরিবেশ: কিছু প্রক্রিয়ায় বিষাক্ত বা পরিবেশ দূষণকারী পদার্থ ব্যবহার করা হয়।
5. ফাটল বা ফাঁক তৈরি হতে পারে: নন-ফিউশন পদ্ধতিতে, বিশেষ করে সোল্ডারিং বা ব্রেজিংয়ে, সংযোগের মধ্যে ফাঁক বা ফাটল থেকে যেতে পারে, যা শক্তি ও স্থায়িত্বে নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।
6. সীমিত ব্যবহার: সব ধরনের জোড়ের জন্য নন-ফিউশন ওয়েল্ডিং উপযুক্ত নয়।
7. জটিল জোড়ের জন্য অনুপযুক্ত: জটিল জোড়ের ক্ষেত্রে নন-ফিউশন ওয়েল্ডিং কঠিন হতে পারে।
8. বেশি দক্ষতা প্রয়োজন: নির্ভুলতা প্রয়োজনীয় হলে, যেমন ইলেকট্রনিক্স বা মাইক্রো-ওয়েল্ডিংয়ে, অত্যন্ত দক্ষ ও প্রশিক্ষিত কর্মী দরকার হয়, যা প্রশিক্ষণ এবং সময়ের প্রয়োজন হতে পারে।
নন-ফিউশন ওয়েল্ডিং এর নিজস্ব সুবিধা ও অসুবিধা রয়েছে। কোন প্রক্রিয়াটি ব্যবহার করা হবে তা নির্ভর করবে প্রকল্পের বিশেষ প্রয়োজনীয়তার উপর। বিভিন্ন কারণ যেমন ধাতুর ধরন, জোড়ের শক্তি, খরচ, সময় এবং পরিবেশগত প্রভাব বিবেচনা করে একটি উপযুক্ত ওয়েল্ডিং প্রক্রিয়া নির্বাচন করা উচিত।